প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে তিস্তা চুক্তির অগ্রগতি হবে: কাদের

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের ভারত সফরে তিস্তা চুক্তি না হলেও অগ্রগতি হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, বর্তমানে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো। চুক্তি যে কোনও সময় হতে পারে। সম্পর্কের বিষয়ে পারস্পরিক সন্দেহ ও সংশয়ের দেয়াল আমরা ভেঙে ফেলেছি, যা ২১ বছর ধরে বিরাজমান ছিল। বিএনপি এই সম্পর্ক তিক্ত করার জন্য বহুলাংশে দায়ী।

তিস্তা চুক্তি সম্পন্ন না হওয়ার জন্য বিএনপিকে দায়ী করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, তারা যে সমস্যাটাকে জিইয়ে রেখেছে, এখন যে কোনও সময়ে তা সমাধান হয়ে যাবে।

শুক্রবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের আধুরিয়া এলাকায় ভুলতা ফ্লাইওভারের সাইট অফিসে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের যানজট নিরসনে করণীয় বিষয়ক সভায় এসব কথা বলেন সেতুমন্ত্রী।

এ সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির নেত্রী ভারত সফর শেষে বাংলাদেশে আসার পর বিমানবন্দরে যখন সাংবাদিকরা তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তখন তিনি বলেছিলেন ‘আমি তিস্তার বিষয়টি ভুলে গিয়েছিলাম’। আমরা কিন্তু ভুলে যাইনি। আমার নেতৃত্বে ভারত সফরে গিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তিস্তা চুক্তি ও রোহিঙ্গা বিষয়ে কথা বলেছি। বিএনপির বিরুদ্ধে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে একটা কথাও বলিনি, কথা বলেছি দেশের স্বার্থ নিয়ে।

তিনি বলেন, আমরা আন্তরিকভাবে সমস্যার সমাধান চাই। সীমান্ত চুক্তির মতো চ্যালেঞ্জিং কাজ আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি করে ফেলেছেন। সে তুলনায় এটা কোনও সমস্যাই নয়। এ সমস্যারও সমাধান হবে। প্রধানমন্ত্রী কলকাতায় গেছেন। সেখানে নরেন্দ্র মোদি, মমতা ব্যানার্জি থাকবেন। এ ব্যাপারে কথা হবে, আমি এখানে বসে বলতে পারি না রেজাল্টা কী হবে। তবে এটা বলি, এই সফরে চুক্তি না হলেও অগ্রগতি হবে।

এ সময় মাদকবিরোধী অভিযানের ব্যাপারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার শুধু রোহিঙ্গা পাঠায়নি, ইয়াবাও পাঠিয়েছে। কাজেই আমাদের সবার এখন ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার। ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এখানে আমরা কাউকে ছাড় দেইনি, সে যেই হোক। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ যদি তদন্তে প্রমাণ হয়, অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি যেই হোন, যেই জায়গায় থাকেন, জনপ্রতিনিধি হোন, নেতা হোন, বড় রাজনীতিক হোন, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। কেউ ছাড়া পাবে না। সবাইকে নেটে আনা হবে। শুরু হয়েছে, দেখতে পাবেন।

তিনি আরও বলেন, খুনের অভিযোগে টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগের এমপি কারাগারে আছেন। দুর্নীতির অভিযোগে আওয়ামী লীগের এমপির দণ্ড হয়েছে। অপরাধ করে পাবনায় মন্ত্রীর পুত্র মাসের পর মাস জেলে বন্দি আছে। তাহলে কোথায় ছাড় দিচ্ছে আওয়ামী লীগ?

এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ ছাড় দিচ্ছে এমন অপপ্রচার করা হচ্ছে। বিশ্বজিৎ হত্যায় ফাঁসির দণ্ড হয়েছে আমাদের কর্মীর। আমরা কী ছাড় দিয়েছি? সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুরে সাংবাদিক হত্যার অভিযোগে আমাদের নির্বাচিত মেয়র কারাগারে আছেন। আমার ছাড় দিলাম কোথায়?

সড়কে যানজট নিরসনের জন্য পুলিশকে অনুরোধ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, রমজান ও ঈদকে সামনে রেখে যানজট সহনীয় পর্যায় আনার লক্ষ্যে ফিটনেসবিহীন গাড়ি, অবৈধ নসিমন, করিমন চলাচল বন্ধ করতে হবে। সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে আমিসহ কোন ভিআইপি যদি আইন ভঙ্গ করেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।

তিনি বলেন, কিছু সংখ্যক পুলিশ রয়েছে, যারা চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত। ওইসব পুলিশের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাকর্মীরাও জড়িত রয়েছে। যদি কারো বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ প্রমাণ পাওয়া যায় তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ সময় পরিবহন মালিকদের সতর্ক করে দিয়ে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় নামানো যাবে না।

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ -২ (আড়াইহাজার) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ নজরুল ইসলাম বাবু, নারায়ণগঞ্জ -১ (রূপগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক, সড়ক পরিবহন বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথ বিভাগের চিফ ইঞ্জিনিয়ার ইবনে আলম হাসান, নরসিংদীর জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, ডিআইজি আব্দুল মালেক, হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি আতিকুর রহমান প্রমুখ।