প্রধানমন্ত্রীর ঈদ শুভেচ্ছা কার্ডে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর আঁকা ছবি

লেখক:
প্রকাশ: ১ বছর আগে

পবিত্র ঈদুল আজাহা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদ শুভেচ্ছা কার্ড তৈরি করা হয়েছে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু-কিশোরদের আঁকা ছবি দিয়ে। সেখানে স্থান পেয়েছে কথা বলতে ও শুনতে না পারা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু আরিফা আক্তার আঁখির একটি ছবি।

আঁখি দিনাজপুর পৌর শহরের পশ্চিম বালুয়াডাঙ্গার এলাকার আনারুল ইসলামের মেয়ে। সে দিনাজপুর বধির ইনস্টিটিউটের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। নিজের আঁকা দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ-শহীদ ঈদগাহ ময়দানের ঈদ জামাতের  ছবি সরকার প্রধানের শুভেচ্ছা কার্ডে স্থান পাওয়ায় খুবই আপ্লুত আঁখি।

 

আঁখির পরিবারের সদস‌্যরা জানান, ছোটবেলা থেকে পড়ালেখায় আঁখি অত্যন্ত মেধাবী। তবে সে জন্মের পর থেকে কানে শোনে না, কথাও বলতে পারে না। বেশ কয়েক মাস আগে সে গোর-এ শহীদ ঈদগাহ ময়দানের ঈদ জামাতের একটি ছবি আঁকে। সেই ছবিটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে পড়ে। এবার দেশবাসীকে দেওয়া পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা কার্ডে আঁখির আঁকা ছবিটি অন্তর্ভুক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

এদিকে শারীরিক প্রতিবন্ধী সন্তানের আঁকা ছবি প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা কার্ডে স্থান পাওয়ায় তার বাবা-মা বেজায় খুশি। তাই তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

আঁখির আঁকা ছবিতে দেখা যাচ্ছে, বিশাল মিনারের সামনে ঈদের নামাজের জন্য কাতারবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে পাঞ্জাবি-টুপি পরা মানুষ। এর মধ্যে কোলাকুলি চলছে, কেউ আবার কোরবানির গরু নিয়ে যাচ্ছে।

আঁখির মা শাহানাজ পারভীন জানান, শিশুকাল থেকেই আঁখির পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ। কিন্তু কথা বলতে ও শুনতে না পারায় তার স্বাভাবিক পড়াশুনা সম্ভব হয়নি। তবে এক সময় নিজে থেকেই ছবি আঁকতে শুরু করে আঁখি। তার আগ্রহ দেখে তাকে ভর্তি করা হয় দিনাজপুর বধির ইনস্টিটিউটে। পাশাপশি একটি আর্ট স্কুলেও তাকে ভর্তি করা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের প্রতি যে অত‌্যন্ত মানবিক, সেটা আমার মেয়ের আঁকা ছবিটি নির্বাচন করার মধ‌্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু-কিশোররা বোঝা নয়; তাদের মধ্যে অনেক প্রতিভা আছে।

আঁখির বাবা আনারুল ইসলাম বলেন, ‘ছবি আঁকার বিষয়টি মেয়ের নিজের পছন্দের। মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, পরিবেশ, আকাশ, প্রকৃতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আঁখি ছবি আঁকতে পছন্দ করে। স্থানীয় পর্যায়ে ছবি আঁকার প্রতিযোগিতায় আঁখি অংশগ্রহণ করে। ছবি এঁকে অসংখ্য পুরস্কারও পেয়েছে সে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আঁখি যখন কোনো ছবি আঁকতে বসে তখন তা শেষ না করা পর্যন্ত ওঠে না। আমি বিশ্বাস করি, প্রত্যেক বিশেষ চাহিদসম্পন্ন শিশুর মধ্যে কোনো না কোনো প্রতিভা আছে। তাদের কাছে অভিভাকদেরও কিছু শেখার আছে।’

 

উল্লেখ্য, আঁখির আঁকা ঐতিহাসিক গোর-এ-শহীদ ঈদগাহ ময়দানের ছবি সরকার প্রধানের শুভেচ্ছা কার্ডে স্থান পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী খুশি হয়ে আঁখিকে এক লাখ টাকার ঈদ উপহারের চেক পাঠিয়েছেন। বুধবার (২৮ জুন) জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে সেই চেক আঁখির হাতে তুলে দেন হুইপ ইকবালুর রহিম (এমপি)। এসময় জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মমিনুল করিম উপস্থিত ছিলেন।