অলিম্পিক ছাতার ছায়া থেকে বেরিয়ে প্রথমবারের মতো ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজিত হলো ১৯৩০ সালে। সেবার আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স ম্যাচের ঘটনা। দিনটা ১৫ জুলাই, ১৯৩০। উরুগুয়ের পার্ক সেন্ট্রালে আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স মুখোমুখি। সেদিন রেফারির দায়িত্বে ব্রাজিলিয়ান রেফারি গিলবার্তো দি আলমেইদা রেগো। ম্যাচ চলছে বেশ। কিন্তু ঘুরা বন্ধ হয়ে গেছে রেফারির হাতের ঘড়ির চাকা। বুঝুন কান্ডটা! রেফারি ম্যাচ পরিচালনা করবেন কি করে? তিনি অনুমান নির্ভর হয়ে গেলেন। খেসারতও দিতে হলো তাকে।
ম্যাচ শেষ হওয়ার ৬ মিনিট আগেই শেষ বাঁশি বাজিয়ে দেন তিনি। এদিকে ৮১ মিনিটে লুইস মন্তির গোলে ১-০ এগিয়ে আর্জেন্টিনা। তার তিন মিনিট পর ফরাসিরা আর্জেন্টিনার গোলমুখে দারুণ আক্রমণ সাজিয়েছে। এমন সময়ই রেফারি শেষ বাঁশি বাজিয়ে দেন। গণ্ডগোলের চূড়ান্ত পর্যায়। আর্জেন্টিনা সমর্থকরা তো মাঠে নেমে পড়েছে জয়ের আনন্দে। ওদিকে ফরাসি খেলোয়াড়রা ব্যস্ত রেফারিকে ঘিরে প্রতিবাদ জানাতে।
পরিস্থিতি ঠাণ্ডা করতে মাঠে নেমে পড়েন ঘোড়সওয়ার পুলিশ। রেফারি তখনক্ষণে বুঝে গেছেন, কী ভুলটা তিনি করেছেন। এরও অনেক পরে ব্রায়ান গ্ল্যানভিল তার ‘দ্য স্টোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড কাপ’ বইতে লিখেছেন- ‘ওই ম্যাচে ফরাসিরা গোল শোধ দিতে পারত। কিন্তু রেফারিই সব সর্বনাশ করে দেন।’
আর্জেন্টিনা ওই বিশ্বকাপে ১৯ জুলাই মেপিকোর বিপক্ষে ৬-৩ গোলে জেতে। বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্রিক করেন গিলেরমো স্তাবিল। বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্রিকরা আর্জেন্টিনার নামেই লেখা। যাই হোক ওই ম্যাচ হ্যাটট্রিককারী স্তাবিলের খেলার কথাই ছিল না। আর্জেন্টিনার অধিনায়ক মানুয়েল ফেরেরা বিশ্বকাপের মাঝেই দেশে ফিরে গেলেন। কারণ কী? তার আইন পরীক্ষা। বুঝুন তখন বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ অপেক্ষা আইন পরীক্ষা বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
অধিনায়ক না থাকায় শেষ পর্যন্ত খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন স্তাবিল। আর তিনিই কি-না বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্রিকের মালিক হয়ে যান। ওই বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা রানার্সআপ হলেও ব্রাজিল কিন্তু ভালো করেনি। বিশ্বকাপে তাদের শুরুটাই হয়েছিল যুগোস্লাভিয়ার কাছে ১-২ গোলের হার দিয়ে।