#

নতুন একটি ভাইরাসের খবর দিয়েছিলেন চক্ষু বিশেষজ্ঞ লি ওয়েনলিয়াং। এজন্য তিনি সর্তকও করেছিলেন। কিন্তু চীনা কর্তৃপক্ষ পাত্তা না দিয়ে উল্টো তার মুখ বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়। পরে সেই ভাইরাসটিই প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস হিসেবে শনাক্ত হয়। এরপরই চীনে বীর বনে যান ওই চিকিৎসক।

সবশেষ সেই চিকিৎসকও করোনা ভাইরাসের কাছে হার মানলেন। চীনা সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার বিবিসির প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়।

করোনা ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল উহানের কেন্দ্রীয় হাসপাতালে চক্ষু বিশেষজ্ঞ হিসেবে কর্মরত ছিলেন ৩৪ বয়সী এই চিকিৎসক। গত ৩০ ডিসেম্বর লি ওয়েনলিয়াং তার সহকর্মীদের ওই ভাইরাস নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন।

করোনা ভাইরাস লক্ষণগুলির মধ্যে আছে- জ্বর হওয়া, পরে শুকনো কাশি, এরপর শ্বাস প্রশ্বাসের সংক্রমণ ঘটানো। সংক্রামিত বেশিরভাগ লোকেরা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারে।

বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসে এখন পর্যন্ত ৫৬০ জন মারা গেছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশ চীনের নাগরিক। আর এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৮ হাজার মানুষ।

বিবিসি জানায়, গত ডিসেম্বরে সংক্রমণের সাতটি ঘটনা পান এই চিকিৎসক। তার কাছে এই ভাইরাসটিকে দেখতে সার্সের মতো মনে হয়েছিল। এই ভাইরাস ২০০৩ সালে বিশ্বব্যাপী মহামারী তৈরি করেছিল।

উহানের হুনান সিফুড মার্কেট থেকে সংক্রমিত ধরে নিয়ে ওই রোগীদের হাসপাতালে অন্যদের থেকে আলাদা করে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়।

ডা. লি গ্রুপ চ্যাটে সহকর্মী চিকিৎসকদের ভাইরাসটি নিয়ে সতর্ক করে সংক্রমণ এড়াতে ‘প্রতিরক্ষামূলক পোশাক’ পরার পরামর্শ দেন। তবে তখনও তিনি জানতেন না, যে রোগটি ধরা পড়েছে সেটি করোনা ভাইরাস।

সতর্কবার্তা লেখার চারদিন পর পুলিশ তার সঙ্গে দেখা করে, এবং একটি মুচলেকায় তার স্বাক্ষর নেয়। যেখানে তার বিরুদ্ধে ‘সামাজিক শৃঙ্খলায় মারাত্মক বিঘ্ন সৃষ্টিকারী মিথ্যা মন্তব্য’ করার অভিযোগ আনা হয়।

মুচলেকায় লেখা ছিল, ‘আমরা আপনাকে কঠোরভাবে সতর্ক করে দিচ্ছি, আপনি যদি জেদ ধরে এমন অবৈধ কার্যকলাপ চালিয়ে যান, তাহলে আপনাকে বিচারের আওতায় আনা হবে।’

শুধু তিনিই নন, এই অভিযোগে আরও সাতজনের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে বলে তখন পুলিশ জানিয়েছিল।

জানুয়ারির শেষের দিকে ওয়াইবোতে মুচলেকা পত্রের ছবি প্রকাশ করে ঘটনাটি ব্যাখ্যা করেন ডা. লি। এরইমধ্যে তার কাছে ক্ষমা চেয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু তাতে অনেক দেরি হয়ে গেছে।

করোনা ভাইরাস নিয়ে হেলাফেলা করার মাসখানেকের মধ্যে উহান ও এর আশেপাশের এলাকায় মারাত্মকভাবে এটি ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বব্যাপী।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
এখানে আপনার নাম লিখুন