অনলাইন ডেস্ক : সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে নৌ-প্রতিমন্ত্রীর সামনেই তিনটি লঞ্চ অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু করে। তীব্র বেগে এসে সময় মতো থামতে না পেরে পন্টুনে জোরে আঘাত করে একটি লঞ্চ। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় এ ঘটনা জানা গেছে।
শনিবার (১০ আগস্ট) সকাল সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে পরিদর্শনে আসেন নৌ-প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এ সময় পন্টুন থেকে ছেড়ে যায় এম.ভি. ঈগল। আর ওই খালি স্থান তাড়াতাড়ি দখল করতে বেশি গতিতে এগিয়ে আসে এম.ভি. ফারহান-৫।
এ বিষয়ে সময় সংবাদের প্রশ্নের জবাবে নৌ-প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নৌরুটে যারা চলাচল করছে তাদের অবশ্যই শৃঙ্খলার মধ্যে আসতে হবে। এটি দীর্ঘদিনের একটি চর্চা, একদিনে পরিবর্তন হবে না। কিন্তু তাদের শৃঙ্খলায় আসতে হবেই।
এদিকে, লঞ্চ যাত্রাতেও রয়েছে শিডিউল বিপর্যয়। লঞ্চ পূর্ণ হওয়া মাত্রই ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও দীর্ঘ সময় পন্টুনে দাঁড়িয়ে অতিরিক্ত যাত্রী নিচ্ছে লঞ্চগুলো। অনেক ক্ষেত্রে ৫-৬ ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে যাত্রীদের।
লঞ্চ ছাড়ার ক্ষেত্রে যারা অনিয়ম করছে তাদেরকে জরিমানা করা হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভবিষ্যতে যাদের ক্ষেত্রে ধারাবাহিক শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ পাওয়া যাবে, তাদের রুট পারমিটও বাতিল করা হবে। এসব বিষয়ে বারবার তাদের সতর্ক করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, লঞ্চ চলাচলের ক্ষেত্রে ঘাটে থাকা অবস্থায় কর্তৃপক্ষ নিয়ম-নীতি বিধিমালা মেনে চলার চেষ্টা করলেও তারা যখন নদীতে চলে যাচ্ছে তখন তাদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। বলে দেয়া হচ্ছে ওভারটেক করা যাবে না। কিন্তু তারা ওভারটেক করার জন্য প্রতিযোগিতা করছে। এগুলো আমরা সবসময় নিষেধ করছি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঈদ উপলক্ষে এত বেশি চাপ। নবাবপুর থেকে ওয়ানওয়ে রাস্তায় কোনো যানবাহন নেই, শুধু মানুষ আর মানুষ, গতকাল ৩ লাখ মানুষ নির্বিঘ্নে এখান থেকে বাড়ি ফিরে গেছে। আজ সেটা ছাড়িয়ে যাবে। আমরা লঞ্চটাকে কন্ট্রোল করবো, নাকি এই বিপুল পরিমাণ মানুষকে কন্ট্রোল করবো? প্রত্যেকটা মানুষের দায়িত্ব আছে। এখানে মাইকে প্রতিনিয়ত এ ব্যাপারে সতর্ক করা হচ্ছে। কিন্তু সেটা মানতে তো হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, আগের চাইতে এবার অনেক বেশি শৃঙ্খলার মধ্যে এসেছে সবকিছু। ধীরে ধীরে এটা ঠিক হয়ে যাবে। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা একদিকে ভোগান্তি, আরেকদিকে এটাই ঈদের আনন্দ। যেসব বিষয় নিয়ে অভিযোগ করছেন এগুলো যদি না থাকে তাহলে কিন্তু ঈদের আনন্দটাও ফ্যাকাসে হয়ে যাবে।
অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিআইডব্লিইটিএ কর্তৃপক্ষ ছাদে থাকা যাত্রীদের কাছে গেছে, তারা বলছেন নিচে তাদের সিট আছে, ছাদে এমনি দাঁড়িয়ে আছে। যাত্রীরা যদি আমাদের সহযোগিতা না করে তাহলে আমরা কি করবো? গতকাল এক যাত্রী বলছেন, জীবন দেবো তাও যাবো না। এটা তো কোনো কথা হতে পারে না। জীবন অনেক মূল্যবান, আমরা বার বার বলছি জীবনের ঝুঁকি না নিতে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভোগান্তির চাইতেও দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে সে ব্যাপারে আমরা সতর্ক আছি।