সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের প্রতিটি গ্রামকে শহরে রূপান্তরিত করা হবে। শহরের মতো সেবা প্রতিটি গ্রামের মানুষ ঘরে বসে পাবে।
শনিবার (২৭ অক্টোবর) বরগুনার তালতলীতে জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, `শুধু রাজধানী বা শহরের মানুষ সুখে থাকবে তা নয়, প্রতিটি উপজেলা, ইউপি এমনকি গ্রামকে শহর হিসেবে উন্নীত করা হবে। যেন গ্রামের মানুষ ঘরে বসেই শহরের সুবিধা পায়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দক্ষিণ অঞ্চল সম্ভাবনাময় হওয়ার পরও যুগ যুগ ধরে অবহেলিত ছিল। এ এলাকার মানুষ সবসময় কষ্ট করেছেন। তবে আমরা ক্ষমতায় আসার পর এ অঞ্চলের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করি। যাতে ভবিষ্যতে এখানকার কোনো মানুষকে আর কষ্ট করতে না হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ হবে একটি শান্তিপূর্ণ দেশ। সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ এবং মাদকের স্থান এ দেশে হবে না। ইতোমধ্যে জঙ্গি দমন করতে সক্ষম হয়েছি। এখন প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম করে দেব যাতে খেলাধুলার মাধ্যমে ছেলেরা জঙ্গি এবং মাদক থেকে দূরে থাকতে পারে। তারা খেলাধুলার পাশাপাশি সংস্কৃতি চর্চা করবে। কোনো মানুষকে আমরা মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে দেব না।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার জন্য দেশে একশটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘তারেক এবং খালেদা জিয়া দেশকে জঙ্গি এবং সন্ত্রাসের দেশে পরিণত করেছিল। পাঁচবার তারা দেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ান করেছে। তারা ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার পথ বন্ধ করে দিয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে তারা দেশকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছিল। এর কারণ হলো তারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। তাই তারা এ দেশের মানুষের উন্নয়নে কাজ করেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এতিমের টাকা খালেদা জিয়া-তারেক চুরি করেছে। তারেক জিয়া মানি লন্ডারিং করেছে। বিদেশে অস্ত্র পাচার করেছে। দশ ট্রাক অস্ত্র পাচার করতে গিয়ে ধরা খেয়েছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ সব ধরনের অপকর্ম করে আজ তিনি সাজাপ্রাপ্ত। এরা যখনই ক্ষমতায় এসেছে দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে। কিন্তু আমি যখন ক্ষমতায় এসেছি তখন দেশের উন্নতি হয়েছে।’
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্বের দরবারে দেশ উন্নয়নের রোল মডেলে হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এ সম্মান ধরে রাখতে হবে। এ জন্য আর একবার আওয়ামী লীগ সরকারকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনতে হবে। তাই আমরা যাকে নৌকার প্রার্থী মনোনীত করে পাঠাব, তাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।’
জনসভায় ১৫ আগস্টে স্বজনদের হারানো কথা স্মরণ করে কান্না জড়িত কণ্ঠে প্রধানমন্ত্রী বলন, ‘জীবনে চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। আমি সব হারিয়েছি। আমরা দুই বোন সেদিন বিদেশে ছিলাম বলে বেঁচে গেছি। স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে দীর্ঘদিন বিদেশে ছিলাম। আওয়ামী লীগ আমাকে যখন সভানেত্রী নির্বাচিত করল, তখন অনেক প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে দেশে ফিরে আসি। আমার জন্য আপনারা দোয়া করবেন। আপনাদের মাঝেই আমি ফিরে পাই আমার বাবার স্নেহ, মায়ের ভালোবাসা।’
এর আগে বিকেল সোয়া ৩টার দিকে বরগুনার তালতলীতে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। এরপর বরগুনার ২১টি উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে বরগুনাবাসীর জন্য উপহার হিসেবে ঘোষণা করেন তিনি।