বরিশালের বিএম কলেজ এলাকায় আলোচিত কলেজ ছাত্রী গনধর্ষন মামলার মূল হোতা ও নগরীর চিহ্নিত ছিনতাইকারী রাব্বি বেশ ফুরফুরে মেজাজে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বরিশালের বিভিন্ন থানায় থাকা ৮টি মামলার আসামী রাব্বি। ছিনতাই থেকে শুরু করে ডাকাতির অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সর্বশেষ তার বিরুদ্ধে রুজু করা হয় ধর্ষন মামলা। ৭ মাস পর অক্টোবর মাসে আদালত থেকে সে জামিনে মুক্তি পায়। এরপর থেকেই সে বরিশালে বেশ ভাব নিয়েই ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তার নিজ বাড়ির আশ পাশের এলাকার বাসিন্দারাও আতংকে রয়েছেন। কেননা তারাও ওই সময়টাতে রাব্বির বিরুদ্ধে নানা কর্মসূচীতেও অংশগ্রহণ করেন। শুধু তাই নয়, এই মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়েছেন আরেক আসামী মানিক। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে এই গনধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে।
সূত্র মতে, ২৭ এপ্রিল দুপুরের দিকে বিএম কলেজের ১ম গেট সংলগ্ন একটি ভবনে নোট নিতে যায় কাশিপুর গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের এক ছাত্রী। এসময় রাব্বি ও তার সহযোগীরা মেয়েটিকে জিম্মি করে রিক্সা যোগে মথুরানাথ পাবলিক স্কুল সড়কের একটি মেস বাড়িতে নিয়ে যায় এবং সেখানে বসে গনধর্ষণ করে। ঘটনার সাথে সাথেই পুলিশ ওই মেয়েটিকে উদ্ধার করেন এবং মেস থেকে সজীব নামে এক ছাত্রকে আটক করে। এরপরে নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে এই ঘটনার মূল হোতা রাব্বি ও তার সহযোগী মানিককে আটক করা হয়। এই নিয়ে শুধু বরিশাল নয়, বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন থেকে শুরু করে বিক্ষোভ ও ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানানো হয়। দীর্ঘদিন কারাবাসের পর রাব্বি চলতি মাসে জামিনে মুক্তি পায়।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ধর্ষন মামলার বাদী পক্ষ তেমন স্বাবলম্বী নয়। আসামী পক্ষ থেকে তাদের কাছে বিপুল পরিমান টাকার অফার দেওয়া হয় মামলা তুলে নিতে। এই বিষয়টি খোদ স্বীকার করেছেন এক এনজিও কর্মীও। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি জানান, ‘আমরা ভিকটিমের বাসায় গিয়েছিলাম। মামলা পরিচালনা করতে তাদের তেমন কোনো আগ্রহ দেখা যায়নি। মনে হচ্ছিল টাকা নিয়েই বিষয়টি থামিয়ে দেবেন বাদী পক্ষ। কেননা প্রথম দিক থেকে মনে হয়েছিল এই মামলায় সাজা হয়ে যাবে। পরে বাদী পক্ষের ভাবেই বুঝেছি ফলাফল শুন্য।
নগরীর কলেজ রোড এলাকার বাসিন্দা আবু জাফর বলেন, এই ধরণের আসামীর প্রকাশ্যে ঘোরা আসলেই ভয়াবহ বিষয়। বলতে গেলে নিজেদের কাছে নিরাপত্তাহীণতার মধ্যে বাস করছি মনে হয়। প্রশাসনের কাছে এসব আসামীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী থাকবে। প্রকাশ্যে রাব্বির ঘোরা ফেরা নিয়ে আতংকের সুর শোনা গেছে বিএম কলেজ ও নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে। চিহ্নিত এই সন্ত্রাসীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছেন তারাও।
উন্নয়ন সংস্থা আভাস’র নির্বাহী পরিচালক রহিমা সুলতানা কাজল বলেন, ‘দেশে তো আইনের শাসন নেই। কোনো একটি ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষনিক আমরা সমাজকর্মীরা বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে সেটাকে একটা পর্যায়ে তুলে দেই। এরপর যাদের দায়িত্ব থাকে, তারা যদি সেটা ঠিক ভাবে পালন না করে এতে আমাদেরই বা কি করার আছে। এরপর আবার নতুন ইস্যু আসলে, সেটা নিয়ে আমরা পুনরায় ব্যস্ত হয়ে পরি।’
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো: মাহাফুজুর রহমান বলেন, ‘আদালত থেকে যদি কেউ জামিন পায়, তাহলে সেই বিষয়টিতে তো আসলে আমাদের মন্তব্য করা ঠিক না। তবুও বিষয়টি আমরা খোঁজ খবর নিয়ে আবার দেখব।’
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com