সুনামগঞ্জের পাগলায় গরু চুরির অভিযোগে আটক এক ব্যক্তির পুলিশের মারধরে মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার স্বজনরা। এ ঘটনায় স্বজনরা ও বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন।
সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাগলাবাজার এলাকার শত্রুমর্দন গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া ওই ব্যক্তির নাম উজির মিয়া (৪৫)। রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
স্থানীয় ও নিহত ব্যক্তির পরিবার সূত্র জানায়, ১০ থেকে ১২ দিন আগে উপজেলার দরগাপাশা এলাকা থেকে একটি গরু চুরি হয়ে। এ ঘটনায় গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে পাগলা এলাকার শত্রুমর্দন গ্রামের উজির মিয়াকে সন্দেহমূলকভাবে আটক করে পুলিশ। শান্তিগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) দেবাশীষ, এসআই প্লাটন কুমার সিংহ ও আক্তারুজ্জামান তাকে নিজ বাসা থেকে আটক করে।
স্বজনদের অভিযোগ, থানায় এনে মারধর করা হয় উজির মিয়াকে। পরের দিন তাকে সুনামগঞ্জ আদালতে নেওয়া হলে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। পরে গুরুতর আহত উজির মিয়াকে প্রথমে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রোববার রাতে তিনি মারা যান।
এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ সকালে উজির মিয়ার মরদেহ নিয়ে সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কে মানববন্ধন করেন আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী। সেখানে ইউএনওর গাড়ি এলে এলাকাবাসী বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। গাড়ির চালক দ্রুত সরে যাওয়ার সময় মরদেহের ওপর গাড়ি তুলে দেন। এতে বিক্ষুব্ধ জনতা আরও ক্ষেপে গিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই গোলাম সারায়োর মাসুম বলেন, ‘পুলিশ আমার নির্দোষ ভাইকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। আমরা ভাই একটা রাতও ঘুমাতে পারেনি। শুধু যন্ত্রণায় চিৎকার করেছে।’
এদিকে নিহত ব্যক্তির স্বজনদের অভিযোগ, বিক্ষোভ থেকে সরে যাওয়ার সময় মরদেহের ওপর দিয়ে যায় ইউএনওর গাড়ি। তার গাড়িচালক গাড়িটি মরদেহের পায়ের ওপর দিয়ে তুলে দেন।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার উজ জামান।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আনোয়ার আলিম বলেন, ‘আসলে ইচ্ছা করে কেউ লাশের ওপর দিয়ে চালিয়ে যেতে পারে না। তবে এ ঘটনার সঙ্গে যেই জড়িত হোক এবং যদি ইচ্ছাকৃত হয়ে থাকে তাহলে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’