পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজির আহমেদ বলেছেন, করোনাকালে মানবিকতা ও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে পুলিশ যেভাবে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে, তাদের প্রতি সেবার হাত বাড়িয়েছে, যেভাবে সহযোগিতা দিয়েছে, তা দেশে-বিদেশে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। মানুষও এর প্রতিদান দিয়েছে।
মানুষ তাদের মনের মণিকোঠায় পুলিশকে স্থান দিয়েছে। জনগণের প্রতি পুলিশের এ ধরনের মানবিক আচরণ ও সেবা অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রোববার (১৫ নভেম্বর) সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
পুলিশ প্রধান বেনজির আহমেদ বলেন, পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা বেড়েছে, পাশাপাশি তাদের প্রত্যাশাও অনেক। জনগণের সাথে ভালো আচরণ করতে হবে, মানবিক আচরণ করতে হবে। পাশাপাশি দৃঢ়তার সাথে আইন প্রয়োগ করতে হবে।
আইজিপি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আনুকূল্যে গত ১০ বছরে বাংলাদেশ পুলিশ অনেক দূর এগিয়েছে। আমাদেরকে যেতে হবে আরও বহুদূর। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ সড়ক-মহাসড়কে, শিল্প কারখানায় নিরাপত্তা দিতে সক্ষম হয়েছে। বিদেশিরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করছে, ব্যবসা করছে, দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিতে হবে।’
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে বাংলাদেশ পুলিশের সবচেয়ে বড় ইউনিট ও ‘ফেস অব পুলিশ’ আখ্যায়িত করে আইজিপি বলেন, ‘ডিএমপিতে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের কর্মদক্ষতা ও আচরণের ওপর পুলিশের ভাবমূর্তি অনেকাংশে নির্ভর করে।’
আইজিপি দৃঢ় কন্ঠে বলেন, ‘পুলিশের কোনো সদস্য ড্রাগ গ্রহণ করবে না, ড্রাগের ব্যবসা করবে না, ড্রাগ ব্যবসায়ীদের সাথে সম্পর্ক রাখবে না।’
দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স পুনর্ব্যক্ত করে আইজিপি বলেন, ‘পুলিশে কোনোভাবেই দুর্নীতি বরদাশত করা হবে না। যারা দুর্নীতি করে বড় লোক হতে চায়, তাদের জন্য পুলিশের চাকরি নয়।’
সেবাপ্রার্থী বা জনগণকে কোনো প্রকার হয়রানি বা নির্যাতন করা যাবে না। মানুষকে ভালোবেসে হাসিমুখে সেবা দিতে হবে, বলেন আইজিপি।
তিনি বলেন, আমরা জনগণের কাছে যেতে চাই। সারা দেশকে ৬ হাজার ৯১২টি বিটে ভাগ করে বিট পুলিশিং চালু করা হয়েছে। এতে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে এবং সংশ্লিষ্ট বিটের আইন-শৃঙ্খলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।
তিনি বলেন, পুলিশ সদস্যদের কল্যাণে ইতোমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। চিকিৎসাক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালকে বিশেষায়িত হাসপাতালে পরিণত করা হচ্ছে। ঢাকায় আরেকটি পুলিশ হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালগুলো আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। পুলিশ সদস্যদের সন্তানদের লেখাপড়ার সুবিধার্থে ৮টি বিভাগীয় সদর দপ্তরে মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাংলা এবং ইংরেজি উভয় মাধ্যমে পড়াশোনার ব্যবস্থা থাকবে।
আইজিপি বলেন, দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করা একটি বিরল সুযোগ ও সম্মানের বিষয়। জনগণের জন্য আমরা যত বেশি কাজ করবো, তাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক তত বেশি সুসংহত হবে।