পুলিশের ওপর ছাত্রলীগের হামলা, ৫ পুলিশ আহত

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় দায়িত্ব পালনের সময় পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশ সদস্যদের বেধড়ক মারপিট করেন তারা। পুলিশের পোশাকও ছিঁড়ে ফেলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

এতে চরসিন্দুর পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্বরত উপপরিদর্শক (এসআই) প্রদীপ কুমার দাশসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ মোহাম্মদ রাজনসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারের পর রোববার বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

গ্রেফতার অন্য পাঁচজন হলেন- ছাত্রলীগ কর্মী সুমন মিয়া (২৫), শফিকুল ভূঁইয়া (২৪), জাহির (১৯), শুভ মিয়া (২০) ও রাজন (২৭)। তারা সবাই চরসিন্দুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যায় গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর নতুন ব্রিজে ঘুরতে আসেন।

এ সময় তারা ব্রিজের এক পাশে বসে তাস খেলছিলেন। তখন হৃদয় নামের স্থানীয় এক যুবক তাদের তাস খেলতে নিষেধ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে কালীগঞ্জ থেকে ঘুরতে আসা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বিষয়টি পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ মোহাম্মদ রাজনকে জানান।

এরই জেরে শেখ মোহাম্মদ রাজনের লোকজন হৃদয়কে মারপিট করেন। খবর পেয়ে চরসিন্দুর ক্যাম্পের পুলিশের একটি দল সেখানে যায় এবং উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানায়। কিন্তু তারা পুলিশের কথা অমান্য করে দুপক্ষে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ। এ সময় রাজনের শরীরে লাঠির আঘাত লাগে। এতে তার সমর্থকরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পরে ছাত্রলীগ নেতা ও তার সমর্থকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তারা পুলিশ সদস্যদের মারপিট করেন। একই সঙ্গে পুলিশের গায়ে থাকা ইউনিফর্ম ছিঁড়ে ফেলেন তারা।

তাদের হামলায় চরসিন্দুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (আইসি) এসআই প্রদীপ কুমার দাশ, কনস্টেবল জাহিদ, নাদিম, গাইয়ুম ও নায়েক আলামিন আহত হন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ঘটনায় এসআই প্রদীপ কুমার দাশ বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামি করে পলাশ মডেল থানায় মামলা করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রোববার দুপুরে পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ মোহাম্মদসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে জানতে পলাশ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আপেল মাহমুদকে ফোন করলেও ধরেননি তিনি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পলাশ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মকবুল হোসেন মোল্লা বলেন, পুলিশকে মারপিট ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগে পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি রাজনসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।