পিরোজপুরে ব্যবসায়ীকে মারধর ও দোকানে হামলার বিচার দাবি

লেখক:
প্রকাশ: ১ বছর আগে

পিরোজপুর শহরের এক কাপড় ব্যবসায়ীকে মারধর ও দোকানে হামলা চালিয়ে লুটপাটের ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছ শহরের ব্যবসায়ীরা। হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে শহরের ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ রেখে ও বিক্রি বন্ধ করে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। এদিকে কাপড় ব্যবসায়ীদের আন্দোলনের সাথে একমত প্রকাশে করে জেলা ব্যবসায়ী সমিতির ৫৬টি সংগঠন একসাথে আন্দোলন করায় উত্তাল হয়ে উঠেছে পিরোজপুর শহরে। রবিবার সকাল থেকেই পিরোজপুর শহরের বিভিন্ন দোকানের সামনে এমন চিত্র দেখা যায়।

জানা যায়, পিরোজপুর শহরের কাপুড়িয়া পট্টির মুঈন গার্মেন্টসের ব্যবসায়ীর উপরে কাপড় ক্রয় নিয়ে ঝগড়ার জেরে শনিবার দুপুরে একদল যুবক এসে হামলা চালিয়ে দোকানের ব্যবসায়ী রেজওয়ান খান সুইটের উপর হামলা চালিয়ে তাকে আহত করে এবং দোকানের মালামাল লুটপাট করে।

প্রতিবাদ জানিয়ে শহরের ব্যবসায়ীর জড়িতদের আটকের দাবিতে রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে কাপড় ব্যবসায়ীরা তাদের দোকান বন্ধ করে প্রতিবাদ জানান। এরই ধারাবাহিকতায় জড়িতদের গ্রেফতারসহ বিচারের দাবাতে আজ জেলার ব্যবসায়ীরা বেলা ১১টা থেকে ১১টা ১০ মিনিট পর্যন্ত সকল প্রকার বিক্রি বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানান।

ব্যবসায়ীরা এ সময় জানান, স্থানীয় কিছু যুবক ছাত্রলীগের নাম করে বিভিন্ন সময় তাদের উপর হামলা চালিয়ে ব্যবসায়ীদের ক্ষতিগ্রস্ত করে আসছে। তাই ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের কাছে তাদের বিচারের দাবি করেন। ব্যবসায়ীদের এ আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়ে উছেছে শহর।

আহত ব্যবসায়ী রেজওয়ান খান সুইট জানান, গতকাল শনিবার সকালে আমার দোকানে স্থানীয় কিছু ছেলেরা আসে কেনাকাটা করার জন্য। তাদের সাথে দামে বনিবনা না হওয়ায় পরবর্তীতে তারা লোকজন নিয়ে আমার উপরে হামলা চালায়। তখন দোকানপাট ভাঙচুর করে দোকানের ক্যাশে থাকা প্রায় ৮৫ হাজার টাকা লুটপাটসহ আমাকে মারধর করে। এতে দোকানে প্রায় আড়াই লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন করে। আমরা থানায় জানিয়েছি, দেখি পুলিশ কি ব্যবস্থা নেয়।

পাদুকা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আল আমিন সরকার জানায়, বিভিন্ন দোকানে এর আগেও তারা হামলা চালিয়েছে। আমরা ব্যবসায়ীরা একতাবদ্ধভাবে বলা শুরু করলে প্রশাসন, ছাত্রলীগ, ছাত্রদল কোন কিছুই দেখবো না। আমরা প্রশাসনকে ৭ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছি। যদি এর মধ্যে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হয় তবে আমরা কঠোর অবস্থান নিতে বাধ্য হবো।

ব্যবসায়ী জাহিদ হোসেন জানান, পিরোজপুর জেলা ছাত্রলীগের কিছু নামধারী সন্ত্রাসীরা আছে যারা বিভিন্ন সময় দোকানপাটে হামলা চালায়। চাঁদা না দিলেই তারা বিভিন্ন সময় আমাদের উপর হামলা করে। গতকালও একই কাজ করেছে তারা। আমরা সরকারকে ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়ে ব্যবসা করি। আমরা তো সন্ত্রাসী না, আমাদের উপর কেন বারবার সন্ত্রাসী হামলা হবে বারবার। আমরা এর প্রতিবাদসহ সুষ্ঠু বিচার চাই। দ্রুত সময়ে এর সুষ্ঠু বিচার না হলে আমরা পরবর্তীতে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিবো।

পিরোজপুর পৌর কাউন্সিলর সাদুল্লাহ লিটন বলেন, পিরোজপুরে ইদানিং কিছু মাদকাসক্ত ছেলেরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। দাম-দর করতে আসে। বোনাবোনি না হলে তারা সেগুলো নিয়েও যায়। তাতে বাধার সৃষ্টি করলে বাধে হামলার ঘটনা।

পিরোজপুর পৌরসভার কাউন্সিলর ও ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য সরদার জিয়াউল হাসান টিপু জানান, বিগত দিনেও এমন করে অনেক ঘটনা ঘটেছে। কিছু সন্ত্রাসীদের কারণে পিরোজপুরের ব্যবসায়ীরা শান্তিতে ব্যবসা করতে পারছে না।

পিরোজপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আ. জা. মো: মাসুদুজ্জামান জানান, ব্যবসায়ীদের উপর হামলার বিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।