পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার স্মৃতিমনি থেকে নায়িকা পরীমণি, শৈশব এলাকায় নানা গুঞ্জন

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার মিরুখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ সিংহখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেনি ও ভগিরাতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে স্মৃতিমনিই বর্তমানে আলোচিত চিত্র নায়িকা পরীমনি।

মঠবাড়িয়া উপজেলার ভগিরাতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক শামসুল হক গাজী হলেন তার নানা।

সালমা বেগম ও মনিরুল ইসলাম দম্পতির একমাত্র সন্তান পরীমণি। জন্মের তিন বছর বয়সে মাকে হারান। তখন থেকেই নানা শামসুল হক গাজী কোলেপিঠে করে বড় করেছেন তাকে।

বাবা মারা জান ২০১২ সালে। বাবা-মা নাম রেখেছিলেন শামসুন্নাহার স্মৃতি। ডাকনাম স্মৃতিমনি। ঢাকায় শোবিজের ঝলমলে জগতে এসে নাম ধারণ করেন পরীমণি।

গত বুধবার রাজধানীর বনানীর বাসা থেকে মাদকসহ গ্রেপ্তার হন। পরে মাদক আইনের মামলায় চার দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

এ নিয়ে আলোচিত চিত্র নায়িকা পরীমনির শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া ও পার্শ্ববর্তী ভান্ডারিয়ায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। চলচ্ছে নানা গুঞ্জন। নানাবাড়িতেই শৈশব কেটেছে পরীমণির।

সিংহখালী নানাবাড়িতে এখন থাকেন পরীমণির ছোট খালা তাসলিমা বেগম ও তাঁর স্বামী জসিম উদ্দিন। পরীমণি সময় পেলেই ছুটে যান শৈশবের স্মৃতি বিজড়িত নানাবাড়িতে।

এলাকার সাধারণ মানুষদের চোখের সামনে বেড়ে ওঠা শামছুননাহার স্মৃতি যে একদিন সারা দেশে এমন আলোচনায় আসবে তা কি কেউ ভেবেছিল! তাই এ নিয়ে অনেকের চোখে বিস্ময়! পাশাপাশি চলছে নানা গুঞ্জন, কানাঘুষা।

ছোট খালা তাসলিমা বেগম বলছেন, সবকিছুই চক্রান্ত। জনপ্রিয়তার কারণে পরিকল্পনা করে পরীমণিকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে।

হঠাৎ করে চলচ্চিত্র জগতে বেশি জনপ্রিয়তাই পরীর জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরীর সঙ্গে যা ঘটেছে সেটি চক্রান্ত মনে হচ্ছে।

এর আগেও ওকে বাধ্য করা হয়েছিল। মেরেও ফেলতে চেয়েছিল। যা পরী বিভিন্ন সময়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মিডিয়াকে জানিয়ে আসছিল।

এই ঘটনার পেছনে যারা আছেন, তাঁদের সম্পর্কে আমরা জানতে চাই। পরী সম্পূর্ণ নির্দোষ। আমরা পরীর মুক্তি চাই। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাই।

এলাকার বাসিন্দা নুরজাহান বেগম বলেন, আমরা ছোটবেলা থেকে শামছুননাহার স্মৃতিকে দেখেছি, সে ওই রকম মেয়েই নয়। তার আচরণ অনেক শান্ত স্বভাবের।

এমন ঘটনা আমাদের পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন। আরেক বাসিন্দা রেহেনা বেগম বলেন, এই এলাকার স্কুলেই পরী পড়াশোনা করেছে। কখনো এমনটা মনে হয়নি।

তাঁর নানা ভগিরাতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক। তিনি অনেক ভালো মানুষ। পরিবারের প্রায় সবাই শিক্ষক। ভালো পরিবারের মেয়ে পরী, সে কখনো এমনটা করতে পারে এটা মানতে পারছি না।

পরীমনির ছোট খালু শিক্ষক জসিম উদ্দিন বলেন, ছোটবেলা থেকে নানাই তাঁকে পড়াশোনা করিয়েছেন। আমরা কেউই চাইনি সে এই জগতে আসুক, হয়তো তার প্রতিভা ছিল।

প্রতিভার কারণেই আজ তাঁর এই অবস্থা হয়েছে। নানাভাইয়ের প্রতি সে অনেক দুর্বল। যেখানে নানাভাই থাকে, সেখানে এমনটা আমরা বিশ্বাস করতে পারি না।

এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক। দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হোক।

উল্লেখ্য, গত বুধবার রাজধানীর বনানীর নিজ ফ্ল্যাট থেকে পরীমণিকে আটক করে র‌্যাব। সেই বাসাতে নানাকে সঙ্গে নিয়ে থাকেন পরীমণি।

আটকের সময় তিনি বারবার অনুরোধ করছিলেন যেন তাঁর নানাকে কিছু না জানানো হয়।