পাসের হার কমলেও শিক্ষার মান বেড়েছে: শিক্ষামন্ত্রী

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, পাসের হার কমলেও শিক্ষার মান বেড়েছে। পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নে পরিবর্তন আসায় আগের মতো খাতা না দেখে নম্বর দেওয়া বন্ধ হয়েছে। সার্বিক মূল্যায়নে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ছোটখাট ত্রুটি বিচ্যুতিগুলো পর্যালোচনা করে পরবর্তীতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হার গতবারের চেয়ে দুই দশমিক ৫৮ শতাংশ কমে ৭৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ হয়েছে।

রোববার ফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী পাসের হার কমার কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, সমমানে মূল্যায়নের প্রভাব এতে পড়তে পারে। পরীক্ষার মূল্যায়ন যাতে সঠিক হয় সে জন্য বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট গবেষণা করছে। এখন আগের চেয়ে উন্নতমানের মূল্যায়ন হয়। আগে হয়তো শিক্ষকেরা ঠিকমতো মনোযোগ দিয়ে উত্তরপত্র দেখতেন না। এখন সেই সুযোগ কম। এখন পুন: মূল্যায়নে নানা পদ্ধতি রাখা হয়েছে। সব শিক্ষক যেন সমমানে মূল্যায়ন করেন সে জন্য আগে থেকেই দিক নির্দেশনা ঠিক করে পরীক্ষকদের দেওয়া হয়। এর ফলে সারা দেশে সমতা এসেছে। পরীক্ষার খাতাও ভালোভাবে দেখা হয়। তার প্রভাব ফলাফলে পড়তে পারে। তবে তিনি এও বলেন, এটাই একমাত্র কারণ নয়।

কুমিল্লা বোর্ডে পাসের হার হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দুই বছর ধরে অব্যাহতভাবে প্রচেষ্ট নেওয়ার ফলে কুমিল্লা বোর্ড এ জায়গায় এসেছে বলে মনে করি। তারপরেও আরও কী কী বিষয় হতে পারে তা আমরা জেনে জানাতে পারবো। ফলাফলে সমতা আসছে, সবাই কাছাকাছি আছে। একটা ভিত্তি তৈরি হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে, ঝরে পড়া কমছে। নতুন ছাত্ররা টিকে থাকছে। এটা বিরাট ব্যাপার। আগে ছিল কিছু লোকের জন্য শিক্ষা, এখন সবার জন্য শিক্ষা। এটা আমাদের সব থেকে বড় অগ্রগতি। তারা সবাই ফেল করে যাচ্ছে তা কিন্তু না, তারা পাসের সংখ্যা এবং জিপিএ-৫ সংখ্যাতেও যোগ হচ্ছে। বই নিচ্ছে শতভাগ, নিরানব্বই শতাংশের কাছাকাছি স্কুলে আসছে।

শূন্যভাগ প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে নাহিদ বলেন, অনেক জায়গায় দুইজন পরীক্ষা দিয়ে, দুইজনই ফেল। পাসেও হয়তো এমন থাকতে পারে। একজন পাস, শতভাগ পাস। পুরনো ধারাবাহিকতা রাখতে হচ্ছে আইনের কারণে, আমরা কেটে দিলে হাইকোর্ট থেকে রায় নিয়ে আসে। এই ধরনের প্রতিষ্ঠান কী করে বাদ দেওয়া যায় সেজন্য আমরা আইন করছি। সবাইকে নিয়ে করবো। যেখানে প্রতিষ্ঠান নেই সেখানে অবশ্যই দেবো, যেখানে প্রয়োজন নেই, অহেতুক একজন দুই ছাত্র নিয়ে চলছে, সেগুলো আমরা শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসবো এবং আরো ভালো শিক্ষক দেওয়ার চেষ্টা করবো।

প্রশ্নফাঁসের কারণে পাঁচ হাজার সুবিধাভোগীর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এদের সবাইকে খুঁজে বের করছি। কেউ রেহাই পাবেন না। প্রথমত ওই সময় ধরা পড়েছে অনেকে। ১৫৭ জন আছে ২৫টি মামলা নিয়ে। যারা গ্রেফতার হয়েছেন তাদের ছাত্রজীবন, শিক্ষাজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা করছে। এর বাইরেও খাতা দেখার মধ্যে আমরা সামঞ্জস্য রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রশ্নফাঁস হয়েছে শুধুমাত্র ৩০ নম্বরের। ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষার অনেক আগে হলে ঢুকে গেছে। ফলে এর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। ফলাফলে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন শিক্ষামন্ত্রী।