যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরীসহ চারজনের বিরুদ্ধে করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় চার্জ গঠন করেছেন আদালত। এর মধ্যে দিয়ে ওই আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।
রোববার (২২ আগস্ট) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুল হক চার্জ গঠনের আদেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত আগামী ১৩ অক্টোবর সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেছেন। মামলার অপর দুই আসামি হলেন—সাব্বির খন্দকার ও শেখ তায়িবা নূর।
পাপিয়া ও সুমনের আইনজীবী শাখাওয়াত উল্যাহ ভূঁইয়া এসব তথ্য জানিয়েছেন।
রোববার চার্জ শুনানির আগে আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। আসামিদের পক্ষে তাদের আইনজীবীরা অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আবেদন করা হয়।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামিদের কাছে জানতে চান, তারা দোষী না নির্দোষ। আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন। এর পর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আদেশ দেন।
এর আগে গত বছর ২৯ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. নজমুল হক চার আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
চার্জশিটে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন যাবৎ জাল টাকা বাজারজাত করার উদ্দেশ্যে বহন এবং বিপুল পরিমাণ অপরাধলব্ধ অর্থ দেশের বাইরে পাচারের উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
জাল টাকা বহন ও অর্থপাচারের অভিযোগে ২০১৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পাপিয়াসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, ২ লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ জাল টাকা, ৩১০ ভারতীয় রুপি, ৪২০ শ্রীলঙ্কান মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ মার্কিন ডলার ও সাতটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
এর পর ২৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ইন্দিরা রোডে পাপিয়ার বাসায় অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগজিন, ২০ রাউন্ড গুলি, ৫ বোতল বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, ৫টি পাসপোর্ট, ৩টি চেক, বেশকিছু বিদেশি মুদ্রা ও বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি এটিএম কার্ড জব্দ করা হয়।
ওই ঘটনায় পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে পৃথক পাঁচটি মামলা করা হয়। গত বছর ২৩ ফেব্রুয়ারি বিমানবন্দর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলাটি দায়ের করেন র্যাব-১ এর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার সফিকুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১২ অক্টোবর পাপিয়া ও তার স্বামীকে অস্ত্র মামলায় ২০ বছর কারাদণ্ড দেন আদালত।