পানির নিচে বরিশালের কৃষকদের সোনালী স্বপ্ন!

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

মজিবর রহমান নাহিদ॥ ঘুর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে নষ্ট হতে শুরু করেছে কঠোর পরিশ্রমী মানুষগুলোর সোনালি স্বপ্ন।

এক সময়ের ‘বাংলার শষ্য ভান্ডার’ হিসেবে খ্যাত বরিশাল অঞ্চলের মাঠে মাঠে আমন ধানের ছড়া যথেষ্ঠ আশা জাগালেও কৃষককূলের এখন দূরচিন্তার শেষ নেই। এবার বরিশাল কৃষি অঞ্চলে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় শতভাগ, ৮ লাখ ৫৬ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদ সম্পন্ন করেছেন এ অঞ্চলের কৃষি যোদ্ধাগন। উৎপাদন লক্ষ্য রয়েছে প্রায় ১৯ লাখ ৮৫ হাজার টন চাল। এপর্যন্ত আমনের খরিপ-২ মৌসুমে এ অঞ্চলে তেমন কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ধানের ক্ষতি না হলেও থোর অবস্থা থেকে ধান বেরিয়ে পাকা শুরু হতেই মেঘলা আকাশ সহ হালকা বৃষ্টি পরিস্থিতিকে নাজুক করে তুলছে।

ভাটির এলাকা বিধায় বরিশাল অঞ্চলের অনেক জমিতে এখনো অনেকটা পানিও রয়েছে। কিন্তু ধানের সবুজ ছড়া যখন হলুদ বর্ণ ধারণ করে পেকে উঠছে, সেসময়ে এধরনের আবহাওয়া মাজরা পোকার আক্রমণ সহ ধান মাটিতে শুয়ে পড়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে বলে শঙ্কিত কৃষকগন। ফলে ধানে চিটা হবার ঝুঁকিও বেড়ে যেতে পারে।

ইতোমধ্যে সারা দেশের প্রায় ৬৫ ভাগ জমির আমন কর্তন সম্পন্ন হলেও বরিশাল অঞ্চলে ধান কাটা হয়েছে মাত্র ২২ ভাগের মত। ফলে মাঠে প্রায় ৭৮ ভাগ আমন কর্তন বাকি থাকার মধ্যেই প্রাকৃতিক দুর্যোগ এখন কৃষকের দরজায় কড়া নাড়ছে। দুঃশ্চিন্তায় এই অঞ্চলের কৃষককুল।

সদর উপজেলার চাঁদপুরার মানিক মুন্সি জানান,’১বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছিলাম, প্রায় সবই পানিতে তলিয়ে গেছে, এখন কি হবে বুঝতে পারতেছি না।’

চরবাড়িয়া ইউনিয়নে লামছরির আবুল ফরাজি জানান,’সারা বছর সংসার চলে এই ধানের উপর, পুরো ক্ষেতে পানি উঠে গেছে। এই সময় ক্ষেতে পানি ওঠা ধানের জন্য ভালো লক্ষণ না। এবার ভাবছিলাম ফলন ভালো হবে, কিন্তু আমাগো কপালই খারাপ।’

এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরিশাল অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক জানান, নিন্মচাপটি দূর্বল হলেও তার প্রভাবে বৃষ্টি সহ গত দুদিন বিরূপ আবহাওয়া বিরাজ করছে। যা এসময়ে আমনের জন্য অনুকল নয়। তারপরেও আমরা সার্বিক পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি। সরেজমিনে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনের কাজ চলছে বলে জানিয়ে যত দ্রুত সম্ভব ধান কাটতে কৃষকদের বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।