পানির নিচে কৃষকের স্বপ্ন !

:
: ৩ years ago

ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগীতে গত শনিবার থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। রবিবার রাতভর ভারি বৃষ্টি আর আকাশজুড়ে কালো মেঘে ভেসে বেড়াচ্ছে। গতকাল সোমবার দিনভর থেকে বৃষ্টি হয়েছে। এ অঞ্চলের অনেক মাঠের ধান গতরাতে হেলে পড়েছে।

রোববার রাতভর বিরামহীন বর্ষণ ও সোমবার বিকেলে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ভারী বর্ষণে উপকূলের বরগুনা বেতাগীতে শীতকালীণ শাক-সবজি ও আমন ধান ক্ষেতে জলাবদ্ধতা হওয়ায় কৃষকরা চিন্তিত হয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, মহামারী করোনাভাইরাসের পর এ বছর উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ মাঠ ভরা সোনালী ধানের স্বপ্ন দেখছিল। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, এ উপজেলায় এ বছর ১০ হাজার ৯ শ ৬১ হেক্টর জমিতে আমন চাষ করেছে। এছাড়া ২ হাজার ৮ শ ৬৫ হেক্টও জমিতে খেসারি ডাল চাষ করেছে।

শাক-সবজি ৪ শ ৮৫ হেক্টও জমিতে চাষ করা হয়েছে। পারিবারিক পুষ্টি সমৃদ্ধ লালশাক, পাতাকপি, ফুলকপি, ঢেঁড়স, মূলা, শালগম,টমেটো, গাজর, বিট, ধনিয়াসহ সাড়ে ৮ হেক্টর চাষ করা হয়েছে। আমন ধানসহ শীত মৌসুমের শাক-সবজির এবার ভালো ফলন হয়েছে। কৃষি অফিসের বিবরণ অনুযায়ি এ বর্ষণে পানি জমে শতকরা ৭০ ভাগ ক্ষতি হয়েছে।

এ বছর আমন ধানের ফলনও ভালো হয়েছিল। ইতোমধ্যে মাঠভরা সোনালী ধান দেখে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছিল। আর ১০/১২ দিনের মধ্যে কৃষকরা এ সোনালী ফসল ঘরে তুলতে পারতো। বিবিচিনি ইউনিয়নের পুটিয়াখালী গ্রামের কৃষক সুকুমার হাওলাদার জানায়,’ গতকাল রবিবার রাতে তাঁর পাকা আমন ধান হেলে পড়েছে। এতে তিনি চিন্তিত হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে তিনি আমন চাষ করেছেন।

একই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন হোসনাবাদ ও বেতাগী সদর ইউনিয়নের কৃষক স্বপন মোল্লা, রফিকুল ইসলাম। তারা জানায়, হেলে পড়া ধানগাছে অর্ধেক বিনষ্ট হবে। এতে ধানে শষ্য আসবে না চিটা হবে।’ সরেজমিনে দেখা গেছে , বেতাগী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডেও কৃষক আব্দুর রহমান তাঁর হেলে পড়া আমন ধানের ক্ষেত দেখে মাঠেই কাঁন্নায় ভেঙে পড়েন।

ওই কৃষক জানায় , ঋণ নিয়ে বীজ ও সার ক্রয় আমন চাষ করেছে। ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু অসময় বৃষ্টিতে তাঁর স্বপ্ন ভেসে গেছে। আমনের ফসল ঘরে তুলতে না পারলে কিস্তির টাকা পরিশোধ করবে কিভাবে। এতে তিনি বিস্মিত হয়ে পড়েছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন মাঠে পাকা আমনের ধানগাছ হেলে পড়েছে এবং কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন,’ ইউনিয়ন সহকারি কৃষি কর্মকর্তা দ্বারা চাষকৃত আমন এবং অন্যান্য শীতকালীন ডাল জাতীয় ও শাক-সবজির মাঠগুলোতে সরেজমিনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরুপন করা হয়েছে।

এতে ৭০ ভাগ বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। তবে ক্ষতির পরিবার আরো বাড়তে পারে। যেহেতু এখনও বৃষ্টি চলমান রয়েছে। এ মুহূর্তে সঠিক করে বলা যাচ্ছে না।’