পাঁচ বছর ধরে বরিশালের উজিরপুরের ৫ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

দুর্ভোগের আরেক নাম বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ধামুড়া থেকে সাতলা আঞ্চলিক সড়ক। এ সড়কের প্রায় ৫ কিলোমিটার অংশে বেহাল অবস্থার কারণে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। উপজেলার ঘনবসতিপূর্ন ওটরা, সাতলা ও হারতা ইউনিয়নের যোগাযোগের প্রধান পথ ধামুড়া-সতলা সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে বাস চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। যার কারনে উপজেলা ও বরিশাল জেলা সদরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিছিন্ন হয়ে পড়ায় ওইসব এলাকার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে।

এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন উপজেলার হারতা, নাথারকান্দি, শিবপুর, রাজাপুর, সাতলা, নয়াকান্দি, রাজাপুর, পশ্চিম সাতলা, ওটরা, মশাং, কেশবকাঠী, মুন্সিরতাল্লুক, চকমানসহ পশ্চিমাঞ্চলের হাজারো স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী ও সাধারন মানুষ যাতায়াত করে। সরেজমিনে দেখা যায়, ধামুড়া থেকে সাতলা পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার সড়কের ধামুড়া ডিগ্রী কলেজের সামনে থেকে ওটরা চেড়াগালী পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার রাস্তা বেহাল। শতাধিক ছোট-বড় গর্ত রয়েছে। বৃষ্টি পড়লেই গর্তগুলোতে পানি জমে। সড়কটির পিচ উঠে ইটের খোয়া বের হয়ে আছে। তবে অধিকাংশ জায়গায় ইটের খোয়া উঠে মাটি বের হয়ে গেছে। বর্ষায় ওইসব স্থানের খুব বেহাল অবস্থা হয়েছে। বিশেষ করে ধামুড়া কলেজ থেকে একটু দক্ষিনে গজেন্দ্র নামক স্থানসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় সবচেয়ে বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। গজেন্দ্র এলাকায় গেলে দেখা যায় ওই রুটে চলাচলকারী শুভেচ্ছা পরিবহন-৪ নামে একটি যাত্রীবাহি বাস সড়কের মধ্যে গর্তে আটকে বিকল হয়ে রয়েছে। ওই বাসটির পেছনে আরও ৫টি বাস আটকে আছে।

এ সময় স্থানীয় হাসান মোল্লা জানান, বরিশালের উদ্দেশ্যে সকাল পৌনে ১০টায় সাতলা থেকে প্রায় ২৫-৩০ জন যাত্রী নিয়ে ওই বাসটি ছেড়ে সাড়ে ১০টার দিকে গজেন্দ্র নামকস্থানে আসলে সড়কের গর্তে আটকে বিকল হয়। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।

তিনি আরও জানান, প্রতিদিন এই সড়কে একের পর এক দূর্ঘটনা ঘটছে। কিছুক্ষন আগেও এখানে (গজেন্দ্র) একটি ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক উল্টে দুই নারী আহত হয়েছেন। ওই সড়কে অটো ভ্যানচালক উপজেলার তারাশিরা গ্রামের জসিম মোল্লা বলেন, এ রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালাতে তাঁদের খুব কষ্ট হয়। সময় অপচয় হওয়া ছাড়াও দুর্ঘটনার ঝুঁকিও থাকে। এ রাস্তাটি গত পাঁচ বছর ধরে এমন বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকলেও সংস্কারে স্থায়ী কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছেনা। ভ্যান চালক আ. রহিম বেপারী জানান, প্রায় ৫ বছর পূর্বে খানাখন্দে ভরা এ সড়কটি মেরামত করা হলেও মেরামতের এক বছরের মাথায় তা আবার আগের রুপ নেয়।

তবে সড়কটির এমন দূরবস্থা নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্টদের কোন গুরুত্ব নেই। এ রুটের যাত্রী কলেজ শিক্ষক আবুল কাসেম বলেন, রাস্তার অবস্থা নাজুক হওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে কলেজে পৌঁছানো যায় না। দীর্ঘদিন রাস্তাটি সংস্কার করা হয়নি। এখানে যানবাহন প্রতিনিয়ত বিকল হয়ে যাচ্ছে। চালকদের অভিযোগ, এ সড়ক দিয়ে চলাচল করলে গাড়ির বিভিন্ন সমস্যা ছাড়াও যাত্রী পাওয়া যায় না। সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছানো যায় না। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগেও পড়তে হচ্ছে। এসব কারণে তাঁরা বাস চালানো প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইউনুস আলী বলেন, ওই সড়কটি দীর্ঘদিন ধরেই চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে। গত পাঁচ বছরেও সড়কটিতে সংস্কার কাজ হয়নি। সড়কটি দ্রুত সংস্কারের জন্য চেষ্টা চলছে।