ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) থেকে নিবৃত করে নেয়া গোলাম সাকলায়েন শিথিল এবং নায়িকা পরীমনির সম্পর্ক তদন্তে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে পুলিশ সদরদফতর।
কমিটি গঠনের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
রাতে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মো. সোহেল রানা জাগো নিউজকে বলেন, গোলাম সাকলায়েন শিথিল এবং নায়িকা পরীমনির ইস্যু তদন্তে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির নেতৃত্বে আছেন- পুলিশ সদরদফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি (ট্রেনিং) মিয়া মাসুদ করিম। কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন- ডিএমপির উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন সেন্টারের উপ-কমিশনার (ডিসি) হামিদা পারভীন ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ পুলিশ সুপার (ফরেনসিক) রুমানা আক্তার।
এর আগে শনিবার (৭ আগস্ট) গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) গোলাম সাকলায়েন শিথিলকে ডিবির সব দায়িত্ব থেকে নিবৃত করা হয়। পরে তাকে পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) পশ্চিমে পদায়ন করা হয়।
পরীমনি গত জুন মাসে বোটক্লাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন অভিযোগ করার পর যে মামলা হয়েছিল, সেটির তদন্তকালে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে যান ডিবির কর্মকর্তা গোলাম সাকলায়েন শিথিল।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বোট ক্লাবের ১৩ জুনের ঘটনার পর পরীমনি তাকে ধর্ষণচেষ্টা ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে অভিযোগ আনলে মামলা হয়। মামলার পরদিনই আসামি হিসেবে ক্লাব নেতা ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদকে রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার সঙ্গে গ্রেফতার হন আরও কয়েকজন সহযোগী।
মামলা তদন্তের অংশ হিসেবে পরীমনিকে গোয়েন্দা কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। তখনই ডিবির গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) গোলাম সাকলায়েন শিথিলের সঙ্গে পরিচয় হয় পরীমনির। এরপর দুজনের মধ্যে শুরু হয় যোগাযোগ। নিয়মিত পরীমনির বাসায় যাতায়াত শুরু করেন গোলাম সাকলায়েন শিথিল। মাঝে-মধ্যেই গাড়ি নিয়ে বের হতেন দুজনে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্যানুযায়ী, সবশেষ পরীমনি ডিবির কর্মকর্তা গোলাম সাকলায়েন শিথিলের রাজারবাগের মধুমতি ভবনের বাসায় গিয়ে প্রায় ১৮ ঘণ্টা অবস্থান করেন। ৪ আগস্ট রাতে গ্রেফতারের পর পরীমনি অকপটে স্বীকার করেছেন সবকিছু।
তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, পরীমনিকে গ্রেফতারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে গোয়েন্দা কর্মকর্তা গোলাম সাকলায়েন শিথিলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ফাঁস হয়। পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি জানতে পেরে দ্রুত রাজারবাগের মধুমতি বাসভবনের কেয়ারটেকার শামীমকে সিসিটিভি ফুটেজের ডিভিআরসহ পুলিশ সদরদফতরে ডেকে পাঠান। ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পরীমনির বক্তব্যের সত্যতা পান।