পরীক্ষার গ্রেড পরিবর্তনের চার প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

পাবলিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পরিবর্তন করে নতুন গ্রেড পদ্ধতির প্রস্তাবনা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে তুলে দেয়া হয়েছে। বুধবার মন্ত্রণালয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আন্তঃশিক্ষা সমন্বয়ক বোর্ডের চেয়ারম্যানদের এক বৈঠকে গ্রেড পরিবর্তনের চারটি প্রস্তাবনা তুলে দেয়া হয়েছে বলে সভা সূত্রে জানা গেছে।

নতুন প্রস্তাবনায় জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি), মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) এবং উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় প্রতি পাঁচ নম্বর ব্যবধানে জিপিএ পরিবর্তন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমান পদ্ধতিতে সর্বোচ্চ নম্বরের জিপিএ-৫ কমিয়ে তা জিপিএ-৪ গ্রেড করতে বলা হয়েছে।

সভা সূত্রে জানা গেছে, পাবলিক পরীক্ষায় বিশ্বের সঙ্গে আমাদের নম্বরের শ্রেণিব্যাপ্তি সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে বহির্বিশ্বের সঙ্গে সমন্বয় রেখে জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় ফলাফল পদ্ধতি পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন পদ্ধতিতে জিপিএ-৫ পরিবর্তন করে সর্বোচ্চ জিপিএ-৪ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে ৮০ থেকে ১০০ নম্বরে জিপিএ-৫ দেয়ার পদ্ধতি থাকছে না। পরীক্ষার ফলের পাঁচ নম্বর ব্যবধানে পরবর্তী গ্রেড পরিবর্তন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

জানা গেছে, আরেক প্রস্তাবে জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় সর্বোচ্চ পাস নম্বর ১০০ করা হয়েছে। জিপিএ-৫ পরিবর্তন করে তা জিপিএ-৪ করা হয়েছে। তার মধ্যে ১০০ থেকে ৯৫ নম্বর অথবা ১০০ থেকে ৯০ নম্বর পেলে নতুন গ্রেড হিসেবে ‘এক্সিলেন্ট জিপিএ-৪ গ্রেড’ যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও ৮০ নম্বর পর্যন্ত জিপিএ-৪ হিসেবে ‘এ’ প্লাস দেয়া হবে। পরবর্তী প্রতি পাঁচ নম্বর ব্যবধানে গ্রেড পরিবর্তন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

আরেক প্রস্তাবে, ১০০ থেকে ৯৫ পর্যন্ত জিপিএ-৪ ধরা করা হয়েছে। পরবর্তী গ্রেড হিসেবে ‘এ’, ‘এ’ মাইনাস, ‘বি’ প্লাস, ‘বি’, ‘বি’ মাইনেস, ‘সি’ প্লাস, ‘সি’, ‘সি’ মাইনাস, ‘ডি’ প্লাস ‘ডি’, ‘ডি’ মাইনাস, ‘ই’ প্লাস, ‘ই’, এবং ‘ই’ মাইনাস গ্রেড দেয়া হবে। ফেল হিসেবে ‘এফ’ গ্রেড থাকবে। সর্বনিম্ন পাস নম্বর ৩৩ নির্ধারণ করা হয়েছে।

এমন চারটি প্রস্তাব শিক্ষামন্ত্রীর কাছে তুলে দেয়া হয়েছে। এসব গ্রেডের সঙ্গে সমন্বয় করে সর্বোচ্চ জিপিএ-৪ থেকে পরবর্তী গ্রেড নির্ধারণ করা হবে। তবে পাস নম্বর ৪০ বা তার কম করা যায় বলেও প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এটি ৩৩ নম্বর রাখার পক্ষে অধিকাংশ বোর্ড চেয়ারম্যান মতামত দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বুধবার জাগো নিউজকে বলেন, গ্রেড পরিবর্তনের চারটি প্রস্তাব শিক্ষামন্ত্রীর কাছে তুলে দেয়া হয়েছে। এসব প্রস্তাব বিচার-বিশ্লেষণ করে একটি চূড়ান্ত করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়ার পর তা অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করে চূড়ান্ত করা হবে।

চেয়ারম্যান বলেন, বুধবার শিক্ষামন্ত্রী ব্যস্ত থাকায় খুব বেশি সময় দিতে পারেননি। দুপুর ১টায় তিনি মন্ত্রণালয়ে আসেন। এরপর ৩০ মিনিট তার সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়। গত ১২ জুন শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের এক মতবিনিময় সভায় গ্রেড পরিবর্তনের প্রস্তাবনা তৈরির করার নির্দেশ দেন মন্ত্রী। তার নির্দেশে আমরা চারটি প্রস্তাব তৈরি করে মন্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

সভায় উপস্থিত রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. আবুল কালাম আজাদ ও যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল আলীমের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারাও বিষয়টি নিশ্চিত করেন।