পরিবেশনায় থাকুক বাঙালিয়ানার ছোঁয়া

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

নানারকম নিরামিষ-আমিষের পদ সাজিয়ে পরিবেশনের নিপুণতা বাঙালির রক্তে যেন মিশে আছে। আসলে খাওয়া কেমন হবে যতটা খাবারের মান ও পরিমাণের উপরে নির্ভর করে তেমনি পরিবেশনের উপরেও তার চেয়ে কম কিছু নির্ভর করে না। বাঙালি নিরামিষ জাতীয় পদ দিয়ে খাওয়া শুরু করে। আর খাওয়া শেষে চাই চাটনি বা মিষ্টি জাতীয় কিছু। আগে রাজকীয় খাবারে ঝালে-ঝোলে-অম্বলে খাবার পরিবেশন করা একটি আর্ট ছিল।

জুঁইফুলের মতো সুন্দর ধবধবে সাদা সামান্য গরম ভাত আলুসিদ্ধ ও সুগন্ধি ঘিয়ের সঙ্গে পাতে কাঁচামরিচ নিয়ে সামনে হাজির করলেই মুখ ফিরিয়ে থাকা যাবে না। কিন্তু এই ভাত কীভাবে আরও সুন্দরভাবে পরিবেশন করা যায়, তার পরিচয় পাই কবিদের বর্ণনায়।

‘প্রাকৃত পৈঙ্গলে’ যে নারী রোজ কলাপাতায় গরম ভাত, গাওয়া ঘি, মৌরলা মাছের ঝোল আর পাট শাক পরিবেশন করেন, তার স্বামী ভাগ্যবান হওয়ার কথা বলা হয়েছে। ইতিহাস ছাড়িয়ে রোজকার জীবনে প্রবেশ করলে দেখতে পাই, দুই বাংলায় স্থানভেদে ভাত পরিবেশনের ধরন বদলেছে। বাড়িতে যতগুলো পদ আছে, সেগুলোর সঙ্গে খাওয়ার পরিমাণ মতো ভাত একবারেই থালায় সাজিয়ে দেওয়ার রেওয়াজ। সেখানে বাঙালরা মনে করেন, এক একটি পদের সঙ্গে পরিমাণ মতো ভাত পরিবেশন করলে, মান বাড়ে।

পরিবেশনের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় হল যাচাই। কে চাইছেন আর কে চাইছেন না, তা বোঝার জন্য চাই পরিবেশনের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা। ভোজবাড়িতে এই যাচাই পর্বের চল বহু দিন ছিল। যতক্ষণ না হাঁসফাঁস করছেন, ততক্ষণ চলছে পরিবেশন। ভোজবাড়িতে নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি খেলে গৃহকর্তা নিজে হাতে দিতেন প্রতিশ্রুত দক্ষিণা। এখন তা ভাবলে অবাকই লাগে!