পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগ এসপির বিরুদ্ধে

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে এক পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে থানায় তিন দিন আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে টাঙ্গাইলের পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের পুলিশ সুপার আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে। তিনি নির্যাতন করে ৭০ হাজার টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ পরিচ্ছন্নতা কর্মী মো. ফরিদ মিয়ার। এ ঘটনায় পুলিশ সদর দফতরে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।

শনিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি।

আমি বাংলোতে পৌঁছলে আমাকে এসপি স্যার তার বাংলাের দোতলার পূর্ব পাশের রুমে নিয়ে দরজা আটকে দেন। আমাকে বলেন, তুই এই কাজ কতদিন ধরে করিস? আমি অবাক হয়ে বলি, কোন কাজ স্যার? এরপরই আমাকে বেধরক মারপিট, লাথি মারতে শুরু করেন।

তিনি বলেন, তার ১ লাখ টাকা চুরি হয়েছে এবং এই টাকা আমি চুরি করেছি। আমি অস্বীকার করলে তিনি আমাকে আরাও মারধর করেন। এরপর তিনি থানায় খবর দিলে বিকেল সাড়ে ৫টায় পুলিশের এসআই মাে. আবুল বাশার মােল্লা এসে আমাকে বাংলােতেই জেরা করেন এবং মারধর করেন। এরপর এসআই এবং আরেকজন পুলিশ সিএনজিতে আমাকে মির্জাপুর থানায় নিয়ে যান। থানায় নিয়ে আমার চোখ এবং হাত পিছনে বেঁধে লাঠিপেটা করতে থাকেন। তখন এসআই বাশার আমাকে বলেন, তুমি খারাপভাবে ফেঁসে গেছ, তুমি টাকা না নিলেও তােমাকে ১ লাখ টাকা দিতে হবে, নিলেও ১ লাখ টাকা দিতে হবে। পরে আমাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় উপরে কিছুর সঙ্গে শূন্যে ঝুলিয়ে হাঁটুতে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে। এবং বলেন, ১ লাখ টাকা না দিলে তােকে আমি জানেই মেরে ফেলব। এরপর গভীর রাতে আমাকে থানা হাজতে রাখে।

আমি অত্যাচার সইতে না পেরে আমার আত্মীয়দের কাছে কান্নাকাটি করে টাকা জোগাড় করে আমাকে থানা থেকে নিয়ে যেতে বলি। পরদিনও আমার আত্মীয়রা টাকা জোগাড় করতে না পারলে আমাকে নির্যাতন করে। এবং প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এভাবে তিনদিন থানাহাজতে রাখার পর ১৫ মার্চ আনুমানিক বিকেল ৫টায় এসআই বাশার অটোরিকশায় আমাকে মির্জাপুর থানা থেকে পিটিসি, টাঙ্গাইলে এসপি স্যারের রুমে নিয়ে যান। সেখানে আমার মামা আনােয়ার হােসেন, ভাবি রেখা বেগম, স্ত্রী মুক্তা, বাবা ইসমাইল হােসেন, চাচা নিয়ত আলী এবং এসআই বাশারের উপস্থিতিতে ৭০ হাজার টাকা এসপি স্যারের হাতে দেন। তারপর আমাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

এসপির বাংলো থেকে টাকা চুরির সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে ফরিদ মিয়া বলেন, ‘আমি চুরি করিনি। আমার কাছ থেকে জোর করে টাকা নেয়া হয়েছে। ক্ষমতার জোরে সব করছে। আমি পুলিশ সদর দফতরে অভিযোগ করেছি। এরপর থেকে এসপি স্যার ও এসআই বাশারের লোকজন নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন আমাকে।’

মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়ার কথাও বলছেন তারা। আমি ও আমার পরিবার নিঃস্ব, চাকরি নাই। এখন নিরাপত্তাহীনতায় আছি। আমি ন্যায়বিচার চাই। আমি চুরি না করে অপবাদ নিয়ে বাঁচতে চাই না।