একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি প্রতিশোধ নিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতার আদর্শের ওপর আঘাত হানতে চাইছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িক-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এই আহ্বান জানান তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘একাত্তরের এই দিনে নিশ্চিত পরাজয় জেনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আমাদের মেধা মনন, আমাদের বুদ্ধিদীপ্ত চর্চা, আমাদের মনীষায় চূড়ান্ত আঘাত হেনেছিলো। ১০ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়ন শুরু হয়।’
সেই ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সরকার পতনের মহাসমাবেশ ডাকার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক নিজামুদ্দিন, সাংবাদিক সিরাজউদ্দিন হোসেনকে এই দিন আলবদর বাহিনী তুলে নিয়ে… তারপর এই যে গুমের গল্প বাংলাদেশে বলে ওই গুমের কোনো তুলনা নেই ইতিহাসে। গুম করে ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করা হয়। ১০ তারিখ থেকে এই হত্যাকাণ্ড শুরু হয়।’
‘১৪ তারিখে শহীদুল্লাহ কায়সারসহ জোতির্ময় গুহ, আমাদের ডক্টর জিসি দেব, আনোয়ার পাশা আরও অনেক নির্মমভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর, আলবদর বাহিনী হত্যা করে। আজকের এই দিনে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের পোড়াবাড়ি নীতি অনুসরণ করে পাকিস্তানিরা তাদেরকে গুম করে হত্যা করেছিলো।’
জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা আবারো লক্ষ্য করছি, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এদেশীয় দোসররা একাত্তরের পরাজিত হলেও সেই পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে তারা আবারো সক্রিয়। জঙ্গিবাদী-সাম্প্রদায়িক সে পরাজিত শক্তি আবারো প্রতিশোধ নিতে চাইছে এই বাংলায় অসাম্প্রদায়িক মানবতার ওপর, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর, স্বাধীনতার আদর্শের ওপর।’
‘বঙ্গবন্ধু আজ নেই, আজকের দিনে অঙ্গীকার তার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে আমরা আহ্বান জানাবো ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সাম্প্রদায়িক-জঙ্গিবাদী অপশক্তিকে আবারো প্রতিহত করি এবং পরাজিত করি।’
বিদেশে পালিয়ে থাকা যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খুনিদের ফিরিয়ে আনতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার সদিচ্ছা বা আন্তরিকতার ঘাটতি নেই।’
‘কিন্তু বিদেশে আইনি প্রতিবন্ধকতা আছে। তারপরও আমাদের চেষ্টার কমতি নেই। তাদেরকে অচিরেই দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কারো কারো ব্যাপারে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। আশা করি এই প্রক্রিয়া আমরা শেষ করতে পারবো’, বলেন কাদের।