একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থীরা নিরঙ্কুশ জয় নিয়ে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। তবে রাজনীতি থেকে অবসর নেয়ায় এবার নির্বাচনে অংশ নেননি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তাই নতুন সরকারের অর্থমন্ত্রী কে হচ্ছেন তা নিয়ে সর্বস্তরের মানুষের মাঝে আগ্রহ দেখা দিয়েছে।
অর্থমন্ত্রী হিসেবে সম্ভাব্য যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, জাতিসংঘের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ড. আবদুল মোমেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দিন, বর্তমান অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান উল্লেখযোগ্য।
তবে সবাইকে চমক লাগিয়ে আবুল মাল আবদুল মুহিতকেও টেকনোক্র্যাট কোটায় রেখে দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমনটিও শোনা যাচ্ছে।
সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের মতে, অর্থমন্ত্রী একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ এবং এ মন্ত্রণালয়ের অধীনে অর্থ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ রয়েছে। একটি দেশকে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় নীতি সংস্কার ও প্রয়োগের দিকটি গুরুত্বপূর্ণ। সে ক্ষেত্রে তত্ত্বীয় জ্ঞানের তুলনায় ব্যবহারিক বা বাস্তব অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন কাউকেই নতুন অর্থমন্ত্রী বানানো জরুরি।
এ ক্ষেত্রে বর্তমান অর্থমন্ত্রীকে রেখে দিলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কারণ বর্তমান সরকারের গত দুই মেয়াদে টানা দশটি বাজেট ঘোষণা করেছেন মুহিত। একাদশ জাতীয় সংসদে মহাজোট যে উন্নয়নের ফিরিস্তি দেখিয়ে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে তাতে মুহিতের অবদানও কম নেই।
তবে অনেকেই অর্থমন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে আমলাদের আর চাইছেন না। ফলে পরবর্তী অর্থমন্ত্রী হিসেবে বর্তমান পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালও বেশ এগিয়ে রয়েছেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে সাফল্যের জন্যই তিনি আলোচনায় রয়েছেন। তিনি মন্ত্রণালয়ে যেমন সফল, তেমনি একজন সফল ব্যবসায়ীও। রাজনীতি ও ব্যবসা—বাণিজ্যের পাশাপাশি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবেও খ্যাতি লাভ করেছেন তিনি। মেধার স্বীকৃতি হিসেবে শিক্ষাজীবনেই পেয়েছেন লোটাস উপাধি।
এদিকে অর্থমন্ত্রী আবদুল মুহিত সম্প্রতি বলেছেন, পরবর্তী অর্থমন্ত্রী হিসেবে তার ডেপুটি অর্থাৎ অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান আসতে পারেন। তাই পরবর্তী অর্থমন্ত্রীর তালিকা থেকে এ নামটিও উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের দাফতরিক কাজ শুরুর অপেক্ষায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কতগুলো প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গঠিত হবে নতুন মন্ত্রিসভা।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানা গেছে, আগামী ৫ জানুয়ারির মধ্যে নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হতে পারে। দু’একদিনের মধ্যেই নির্বাচিত এমপিদের গেজেট জারি করবে নির্বাচন কমিশন। এরপর স্পিকার তাদের শপথ পড়াবেন।
উল্লেখ্য, রোববার (৩০ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বচানের প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা গেছে, ২৯৯ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২৫৭টি। ২২টি আসন পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে জাতীয় পার্টি। বিএনপি ৫টি আসন ও অন্যান্যরা ১৩টি আসনে জয় লাভ করেছে। সে হিসাবে জাতীয় সংসদের বিরোধী দল হচ্ছে জাতীয় পার্টি।