“ডেকের ভাড়া দেড়শ’, ডেকের ভাড়া দেড়শ’ ” সুরভী-৮ লঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে কলম্যান জালাল কিছুক্ষণ পর পর যাত্রীদের আকর্ষণে এভাবে ডেকে যাচ্ছেন। ভাড়া শুনে কোনো যাত্রী লঞ্চের সামনের পল্টুনে দাঁড়িয়ে পড়লে তাকে বোঝাতে জালালের অন্য সহযোগীরা এগিয়ে যাচ্ছেন।
এরপর তার মালামাল টেনে নিয়ে লঞ্চে তো তুলে দিচ্ছেন’ই, ডেকেও জায়গা খুঁজে দিচ্ছেন। এমন চিত্র ছিল দেখা গেছে রোববার (৩১ জুলাই) রাতে বরিশাল নদী বন্দরে।
দেড়শ’ টাকা ডেক ভাড়ার কারণে বরিশাল-ঢাকা রুটের এ লঞ্চের প্রতি যাত্রীদের আকর্ষণও ছিল বেশি। তবে বিলাসবহুল অন্য লঞ্চগুলোতে ডেক ভাড়া ছিল দু’শ টাকা। আর সেই হিসেবেও বর্তমানে সরকার নির্ধারিত ডেক ভাড়ার থেকে প্রায় অর্ধেক নেওয়া হচ্ছে যাত্রীদের কাছ থেকে।
সুরভী-৮ লঞ্চের যাত্রী সুমন খান বলেন, লঞ্চের প্রবেশদ্বারে সরকার নির্ধারিত ডেক ভাড়া ৩৫২ টাকা লেখা থাকলেও যাত্রীদের কাছে চাওয়া হচ্ছে দেড়শ’ টাকা। অথ্যাৎ নির্ধারিত ভাড়ার অর্ধেকেরও কম ভাড়া চাওয়া হচ্ছে।
আবার যদিও বড় লঞ্চগুলোতে ডেক ভাড়া ৫০ টাকা বেশি তারপরও বর্তমান সময়ে বরিশাল-থেকে ঢাকা দেড়শ’ কিংবা দু’শ টাকায় যাওয়া সম্ভব ছিল না। পদ্মাসেতুর কারণেই তা সম্ভব হয়েছে। সড়কপথে বাসের রাজত্ব শুরু হওয়ার পর লঞ্চের নৈরাজ্য কমছে।
সুরভী-৮ লঞ্চের কর্মচারী মোশারফ বলেন, এখন প্রতিদিন লঞ্চে যাত্রীদের তুলতে কলম্যানদের আগের মতো ডাকাডাকি করতে হয়। যাত্রীদের বিভিন্নভাবে সুবিধা দিয়ে লঞ্চে তুলতে হয়। একজন যাত্রীর কাছে ডাবল কেবিনের ভাড়া ১৮শ’ টাকার স্থানে ১৬ শ’ টাকা চেয়েছি।
পরে তিনি অন্য লঞ্চের দিক চলে যেতে চাইলে ১৫ শ’ টাকায় কেবিনটি দিতে হয়েছে। আর এভাবে প্রতিদিন যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মুখ ব্যথা হয়ে যাচ্ছে।
পদ্মাসেতু উদ্বোধনের আগে এত কষ্ট ছিল না। তখন সব কেবিন কাউন্টার থেকে বুকিং হয়ে গেলেও এখন হচ্ছে না। আবার প্রতিদিন কিছু কেবিন খালি যাচ্ছে। আর কেবিন বেশি খালি গেলে লোকসান হবে।
এদিন পারাবত ১১ লঞ্চে এক যাত্রী একটি কেবিন নেন। তার সঙ্গে ছিলেন অন্য একজন। কেবিন নিয়ে দর-দামের সময় তারসঙ্গে থাকা অপর যাত্রী ভাড়া দেবেন না বলে জানান। আর তাতে রাজি হতে দেখা গেছে কাউন্টারম্যানকে।
অথচ কিছুদিন আগেও সিঙ্গেল কেবিনে থাকা একের অধিক যাত্রীদের ডেক টিকিট কাটা ছিল বাধ্যতামূলক। তা না হলে যাত্রীদের নানানভাবে হেনস্থা করা হতো।
এদিকে ঘাটে থাকা পারাবত-১১ লঞ্চের সামনে কলম্যানদের সঙ্গে চিহ্নিত দালালদেরও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। দাঁড়িয়ে থাকার কারণ জানতে চাওয়া হলে তারা জানান, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর কেউ কেবিনের জন্য বলেন না।
এমনকি বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার অর্থাৎ যাত্রী চাপের এ তিনদিনও লঞ্চের কেবিন ফাঁকা থাকে, তাই এখন কলম্যানের চাকরি করছেন তারা। এতে চলার মতো কিছু উপার্জন হচ্ছে তাদের।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com