পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্ষতিগ্রস্থ ১৩০ পরিবার পাচ্ছেন স্বপ্নের ঠিকানায় মাথা গোঁজার ঠাঁই। ওইসব পরিবার রয়েছে সেই মহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায়। আগামী ২৭ অক্টোবর (শনিবার) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য নির্মিত আধুনিক সেমিপাকা আবাসন পল্লী “স্বপ্নের ঠিকানা”র আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন বলে জানা গেছে। উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের তাপবিদ্যুৎ-কেন্দ্র লাগোয়া মরিচবুনিয়া গ্রামে ১৬ একর জমির ওপর এ আবাসন পল্লীটি নির্মিত করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য এ ঘরগুলো রাখা হয়েছে প্রস্তুত। কাঙ্খিত সেমিপাকা ঘরগুলো এখন আর স্বপ্ন নয়। চোখের সামনেই দৃশ্যমান। সব কষ্ট, মনের ক্লেশ যেন ভুলে যাবেন ওইসব ক্ষতিগ্রস্থ মানুষগুলো।
সরেজমিনে দেখা গেছে- আবাসন পল্লীর প্রতিটি ঘরে রয়েছে আলাদা তিনটি বেড রুম, ডাইনিং, রান্নাঘর ও একটি বাথরুম। ঘরের সামনের বারান্দা লোহার গ্রীল দিয়ে আটকানো। রয়েছে আলাদা খালি জায়গা। সেখানে সাক-শবজির আবাদসহ হাস-মুরগি পালনের সুযোগও রয়েছে। খনন করা হয়েছে দু’টো বড় আকারের পুকুর। নিরাপদ পানির জন্য বসানো হয়েছে ৪৮ টি গভীর নলকূপ।
এছাড়া এ পুনর্বাসন পল্লীতে আধুনিক দ্বিতল দৃষ্টিনন্দন মসজিদ, দ্বিতল কমিউনিটি সেন্টার ও ক্লিনিক, কাঁচা বাজারের জন্য টোল ঘর, বড় আকারের খেলার মাঠ, ঈদগাঁহ মাঠ, একটি নির্দিষ্ট কবরস্থান, একটি শপিং সেন্টারসহ ভেতরের পানি নিষ্কাশনের জন্য সাড়ে চার কিলোমিটারের ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে। স্বপ্নের ঠিকানায় বসবাসকারী সন্তানদের জন্য সেখানে নির্মাণ করা হয়েছে দ্বিতল একটি স্কুল ভবন। সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে এখানে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সুবিধা থাকবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে কলাপাড়া পৌর শহরসহ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে প্রতিদিনই হচ্ছে আনন্দ মিছিল মিটিং। জেলা,উপজেলার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ আওয়ামীলীগের শীর্ষ স্থানীয় নেতা ও কর্মীরা “স্বপ্নের ঠিকানা” আবাসন পল্লী দফায় দাফায় পরিদর্শন করছেন।
ক্ষতিগ্রস্থরা জানায়- অনেক কষ্ট করেছি। ২০১৬ সাল থেকে বাড়িঘর ছেড়ে শুধু অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয়েছে। এখন চোখের সামনেই দৃশ্যমান। আগে অনেকেই অনেক কিছুই বলেছে। তারা ভাবতে পারেনি এতো সুন্দর ঘর পাবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর রহমান জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত অধিগ্রহণকৃত জমির ক্ষতিগ্রস্ত মালিকদের যথাযথভাবে দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তিনি এসব মানুষের কাছে তাঁদের ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ বাস্তবে দৃশ্যমান করবেন আগামি ২৭ অক্টোবর। এ ব্যাপারে সকল প্রস্তুতিই চলছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাকিবুল আহসান জানান, বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় দক্ষিণাঞ্চলের কলাপাড়ার এই জনপদে যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে, সে জন্য এলাকার জনগন জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনার কাছে চিরঋনী। আবারও নৌকামার্কায় ভোট দিয়ে উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য এলাকার জনগণ দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে কলাপাড়ায় এখন আনন্দমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।’