পটুয়াখালীতে পাতায় সুর তুলে মন মাতান বাউল রেজাউল করিম শাহ

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

যেকোনো গাছের তাজা পাতা হলেই গানের সুর তুলতে পারেন বাউল রেজাউল করিম শাহ। ৬৩ বছর বয়সী বাউল রেজাউল করিম শাহ দীর্ঘ ৪৫ বছর যাবৎ অনুশীলনের রপ্ত করেছেন এই দক্ষতা। পাতার বাঁশি তাকে পরিচয় করিয়েছে স্বনামধন্য বাউল রূপে।

১৯৮৪ সালে জীবিকার সন্ধানে জন্মস্থান বাগেরহাট থেকে কুয়াকাটার বালুচরে আসা এই বাউলকে এখন অনেকেই চেনেন পাতার বাঁশির ওস্তাদ নামে। পেশায় একজন চা দোকানি এই বাউল সুর তুলে মুগ্ধ করেন কুয়াকাটায় ঘুরতে আসা পর্যটক, স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ী ও স্থানীয় মাঝিমাল্লাসহ সব বয়সের মানুষকে।

 

তাই চায়ের দোকানে, সমুদ্র পাড়ে, বনে-জঙ্গলে যেখানেই হোক যে কেউ তার এই সুর শুনতে চাইলেই তিনি মগ্ন হয়ে যান সুর তুলতে। আর সেজন্য একটি গাছের ছোট্ট পাতাই যথেষ্ট।

পাতার বাঁশির শুরুটা জানতে চাইলে বাউল রেজাউল করিম শাহ, ১৮ বছর বয়সে আমার ওস্তাদ শাহ আব্দুল আজিজের হাত ধরে পাতা দিয়ে গানের সুর তোলার হাতেখড়ি। এরপর থেকে শুরু হয় আমার এই সখের পরিচর্যা, একে একে বিগত ৪৫ বছর দরে একটি পাতা দিয়েই তুলে আসছি শত শত গানের সুর।

 

এই বাউল বলেন, বাহেরহাটের মোংলা থানার মিঠাখালী ইউনিয়নের গোয়ালীরমাঠ গ্রামে আমার জন্ম। ছোট বয়সেই আমি যাত্রা, অভিনয়ের পরিচর্যা করতাম। আজ এই পাতার বাঁশি আমাকে অনেক দূরে নিয়ে এসেছে, মানুষ আমাকে ভালোবাসে, আমার পাতার বাঁশি শুনতে চায়, মন দিয়ে শোনে। এটাই আমার তৃপ্তি।

 

কুয়াকাটা শিল্পী গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জনি আলমগীর জানান, কুয়াকাটাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় আমরা যে প্রোগ্রামগুলো করে থাকি সব জায়গাতেই তিনি মানুষের মন কাড়েন তার পাতার বাশির সুরে। তার হাতে এই পাতার বাঁশির সুর শিখে দেশের বড় বড় স্থানে গান করছেন তার অনেক শিষ্য।

 

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা মনে করেন, মানুষের প্রতিভা বিকশিত হওয়ার জন্য প্রয়োজন তার সুস্থ পরিচর্যা। বাউল রেজাউল করিমের মতো অনেক প্রতিভাবান অবহেলিত, পরিচর্যার কারণে তার প্রাপ্তিটা থেকে বঞ্চিত হন যা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সুখকর নয়।