পটুয়াখালীতে এমপির নিজের গ্রামে নৌকার ভরাডুবি, হাতপাখার জয়

:
: ২ years ago

দলীয় কোন্দল, ত্যাগীদের অবমূল্যায়ন, প্রতীক বরাদ্দে অনিয়মের কারণেই এমপির নিজ এলাকায় নৌকার ভরাডুবিতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী।

পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের ক্ষমতাসীন দলের সংসদ মুহিবুর রহমানের নিজ গ্রামের এলাকা ধুলারসর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটেছে। সেখানে প্রথমবারের মতো ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ এর হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী হাফেজ আব্দুর রহিম বিপুল ভোটের ব্যবধানে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

বুধবার (১৫ জুন) ৯ম ধাপের ইউপি নির্বাচনে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধুলারসর ইউনিয়নে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন হাফেজ আব্দুর রহিম।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার আবদুর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া আব্দুর রহিম হাতপাখা প্রতীকে পেয়েছেন ৪৩১২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের মো. মোদাচ্ছের হাওলাদার পেয়েছেন ২৯৫৩ ভোট। এ ইউনিয়নে প্রায় ৭২ শতাংশ ভোট পড়েছে ইভিএম মেশিনে।

এই ইউপির নির্বাচনে মোট সাতজন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছিলেন। এরমধ্যে নৌকা, হাতপাখা ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন আরও পাঁচজন।

এ ব্যাপারে ইসলামি আন্দোলন পটুয়াখালী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ওহিদুজ্জামান বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে মানুষের অধিকার আদায়ের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।

মানুষ ভোট দিতে পারতোনা, স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারতোনা, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের অত্যাচারে সাধারণ মানুষ দিশেহারা অবস্থায় ছিল। এ বিষয় নিয়ে আমরা মানুষের দোরগোড়ায় পৌছেছি। আজকে ধুলারসরের রেজাল্ট তারই প্রমাণ।

তবে তার এই কথার সাথে দ্বিমত পোষণ করে কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রভাবশালী নেতা জানান, মূলত আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফসল এটি। যে কারণে নৌকা প্রতীকের বরাদ্দ সঠিকভাবে হয়নি।

ওখানে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিল, বিএনপিরও একজন প্রার্থী ছিল। কিন্তু তারা সবাই চেষ্টা করেছে নৌকাকে ঠকাতে। সেটিই হয়েছে। তাছাড়া দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি নির্বাচনী মাঠে না থাকায় ইসলামি আন্দোলন সেই গ্যাপটা পূরণ করার চেষ্টা করছে।

ধুলারসরে নৌকার ভরাডুবির কারণ সম্পর্কে জানতে কল করা হলেও স্থানীয় এমপির মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা যায়নি।এদিকে, বুধবারের নির্বাচনে পটুয়াখালী সদর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের মধ্যে তিনটিতে নৌকা এবং দুটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া দশমিনা ও কলাপাড়া উপজেলার দুটি ইউনিয়নে নৌকা প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন।

নির্বাচিতরা হলেন- ইটবাড়িয়া ইউনিয়নে মোজাম্মেল জোমাদ্দার (নৌকা), কালিকাপুর ইউনিয়নে সালমা জাহান (নৌকা), জৈনকাঠি ইউনিয়নে সৈয়দ মোহাম্মদ মহসিন, লতাচাপলি ইউনিয়নে আনসার উদ্দিন মোল্লা (নৌকা), চরবোরহান ইউনিয়নে নজির সরদার (নৌকা)।

এছাড়া ধুলারসরে আব্দুর রহিম (হাতপাখা), লাউকাঠি ইউনিয়নে ইলিয়াছ বাচ্চু (স্বতন্ত্র) এবং মৌকরণ ইউনিয়নে সেলিম কাজী (স্বতন্ত্র) নির্বাচিত হয়েছেন।