পটুয়াখালী জেলার বাউফলে জমি দখলে বাধা দেওয়ায় জবরদখলকারীদের হামলায় ৫ জন আহত হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই সাথে হামলাকারীরা জমি মালিকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
গতো রোববার (১৪ এপ্রিল) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার সূর্যমনী ইউনিয়নের নূরাইনপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গেছে, নূরাইনপুর বাজারের উত্তর পাশে বাসিন্দা রূপসান বিবরে কাছ থেকে ১৮ শতাংশ জমি ক্রয় করেন সোহরাব হোসেন। এরমধ্যে ৩ শতাংশে ছোট একটি ঘর তুলে থাকেন এবং বাকি ১৫ শতাংশ ভোগ-দখলে রয়েছে। পাশের আরেকটি দাগের জমির মালিক মোকসেদ আলী খানের কাছ থেকে একই ইউনিেনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা লিটন খান জমি ক্রয় করেন। কিন্তু লিটন খান ও তার সহযোগীরা তাদের ক্রয়কৃত জমি দখলের নামে সোহরাব হোসেনের ক্রয়করা জমি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরেই।
সোহরাব হোসেন খান বলেন, আমার দুঃসর্ম্পকের আত্মীয় রূপসান বিবির কাছ থেকে জমি কিনে ২০০৮ সালে সাবকবলা দলিল মূলে ভোগ দখল করে আসছি। আমার ক্রয় করা সেই জমি দখলের জন্য অনেকবার চেষ্টা চালায় লিটন ও তার সহযোগীরা। তারা দিনে দখল করতে না পেরে রোববার মাঝ রাতে দেশীয় অস্ত্র, দা, লাঠি নিয়ে এসে আমার জমিতে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে আমার আত্মীয় স্বজন দখলে বাধা দিলে তারা বেদম মারধর করে আমাদের ৫/৬ জনকে আহত করেন। আমরা এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
তিনি বলেন, ওরা যে জমি দাবী করে তা ২০২০ সালের দলিলমূলে। ওদের জমির দাতা আমার আমার জমির দাতা এক নয়। তারপরও ওরা আমার জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর আগে ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর রাতেও হামলা চালায়। সেই ঘটনায় মামলা চলছে। মূলত হামলাকারীরা এলাকার একটি সংঘবদ্ধ চক্র। তারা দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের জমি জবরদখল করার পরিকল্পনা করে আসছে। হামলাকারীদের মধ্যে দুজন সাবেক সেনা সদস্য আছেন। তারা অবসরে গেলেও জবরদখলে ক্ষমতা প্রয়োগ করেন। আমাদের খুন-জখমের ভয় দেখান। ওদের কারনে আমরা ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় আছি।
আহতরা হলেন একই এলাকার আল আমিন, জাকির খান, শিফাত, মামুন, মেহেদী হাসান সাগর।
জাকির খান বলেন, এর আগেও অনেকবার লিটন, বাবুল, কালাম তাদের সহযোগী নিয়ে এসে আমাদের মারধর করে গেছেন। ১৪ তারিখ রাতেও আমাদের মারধর করেছে। আমরা তাদের বলেছি, তোমরা জমি পেলে নিয়ে নাও। কিন্তু রাতের আধারে দখলের চেষ্টা করছো। ওরা যার কাছ থেকে জমি কিনেছে তার দাগ-খতিয়ান অনুসারে জমি বুঝে নিবে। আমাদের জমি দখলের চেষ্টা চালাবে কেন। হামলা করে ওরা আমাদের দোকানপাট ভেঙে ফেলেছে।
আহতদের সূত্রে জানা গেছে, লিটন খান, বাবুল খান, কালাম খান, জেসমিন আক্তার, মাসুম, পারভেজ, আলম মোল্লার নেতৃত্বে ওই রাতে জমি দখলের নামে হামলা, মারধর ও দোকানপাট ভাংচুর করা হয়।
এ বিষয়ে লিটন খান স্বীকার করেন, ১৯৬৭ সালের মূল দলিলমূলে ২০২০ সালে মোকসেদ আলী খানের কাছ থেকে সে জমি কিনেছে। তিনি বলেন, আমরা আমাদের জমিতে দখল নিতে গেলে সোহরাব খানের লোকজন বাধা দেন। এতে হাতাহাতি হয়েছে।
বাউফল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শোনিত কুমার গায়েন বলেন, এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।