ইফতার পার্টিতে দাওয়াত দেওয়া না দেওয়াকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় জিতেন কান্তি গুহ নামে এক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে একই দলের প্রতিপক্ষরা।
শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) বিকেল তিনটায় পটিয়া থানার হাইদগাঁও ইউনিয়নের পূর্ব হাইদগাঁও গাউছিয়া কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর ইফতার মাহফিলের আয়োজন পণ্ড হয়ে যায়। জিতেন কান্তি গুহ হাইদগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সভাপতি বলে জানা গেছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হাইদগাঁও ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা শহীদুল ইসলাম জুলু বলেন, ‘গাউছিয়া কমিউনিটি সেন্টারে ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের ইফতার মাহফিল ছিল। মাহফিলে সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী প্রধান অতিথি ছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে জিতেন কান্তি গুহ বিশেষ অতিথি ছিলেন। বিকেল ৩টার দিকে আমার সামনেই বিএম জসিম (হাইদগাঁও ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান), সাবেক ইউপি সদস্য ইন্দ্রজিৎ চৌধুরী লিও, মো. সাকিব, ফাহিম মিলে জিতেন কান্তি গুহকে বেদড়ক মারধর করে। প্রথমে তাকে পেটাতে পেটাতে কমিউনিটি সেন্টারের বাইরে নিয়ে যায় তারা। তাকে দোকানের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। পিটিয়ে হাত ভেঙে দেওয়া হয়। পরে আমরা উদ্ধার করে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেছি।
উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম শামসুজ্জামান বলেন, ‘বিএম জসিম হাইদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন। কয়েকদিন আগে ইউনিয়ন পরিষদে ইফতার মাহফিল হয়। ওই অনুষ্ঠানে হুইপ সাহেব ও আমরা গিয়েছিলাম। আজ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছে। মাহফিলে হুইপ সামশুল হক চৌধুরী প্রধান অতিথি থাকার কথা। আমরাও মাহফিলে অংশ নেওয়ার জন্য রওয়ানা হয়েছিলাম। এ সময়ে হামলার ঘটনা শুনে যাইনি।’
তিনি বলেন, ‘ইফতারে দাওয়াত দেওয়া না দেওয়া নিয়ে জিতেন কান্তি গুহের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে থানা পুলিশকে মামলা নেওয়ার জন্য বলেছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাইদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিএম জসিম বলেন, জিতেন কান্তি গুহ মুজিববর্ষের ঘর দেওয়ার জন্য লোকজনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। মানুষের জায়গা দখল করেছে। হাইদগাঁওয়ের লোকজন আগে থেকেই তার (জিতের গুহ) ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হয়েছে। লোকজন তাকে মেরেছে শুনেছি।’
আপনার সমর্থিত লিও, সাকিবরা হামলা চালিয়েছে— এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুরো হাইদগাঁওয়ের ৬ হাজার মানুষ আমার সমর্থক। তারাও আমার সমর্থক হতে পারে।’
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, ‘হাইদগাঁওয়ে ইফতার পার্টিতে দাওয়াত দেওয়া নিয়ে দু’পক্ষের বিরোধ হয়েছে। ওখানে জিতেন কান্তি গুহকে মারধর করা হয়েছে। তার হাত ভেঙে গেছে শুনেছি। এ বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।