চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শামসুন্নাহারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) সকালে তাকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশে স্বাক্ষর করেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নিজ ছেলের সঙ্গে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর বিয়ের বিষয়টি গণমাধ্যম থেকে আমার নজরে আসে। এরপর সোমবার সকালে সরেজমিনে একজন সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে পাঠানো হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে শিক্ষিকা শামসুন্নাহারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার উত্তম কুমার কুণ্ডু বলেন, গণমাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে সোমবার সকালে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুমা আক্তারকে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। পরে ওই শিক্ষিকা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন। এরপর আমি তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং নিয়োগকারী কর্মকর্তা জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ জানিয়ে পত্র দিয়েছিলাম। মঙ্গলবার সকালে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০ মার্চ চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের ছোটশলুয়া গ্রামের বিলপাড়ার দিনমজুর অসোক আলীর মেয়ে শারমিন খাতুনের সঙ্গে সহকারী শিক্ষিকা শামসুন্নাহার তার দশম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে আব্দুর রহমানের বিয়ে দেন। প্রথম কয়েকদিন বিষয়টি গোপন থাকলেও স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গেলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
সরেজমিনে বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা যায়, মেহেদি রাঙা হাতে ক্লাস করছেন শারমিন খাতুন। বিয়ের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে, ‘এক সপ্তাহ আগে ম্যাডামের ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে। বর্তমানে জামাই আমাদের বাড়িতে আছে। আমি বাড়িতে এসে স্কুলে ক্লাস করছি।
এ সময় ক্লাস নিচ্ছিলেন অভিযুক্ত শিক্ষিকা শামসুন্নাহার। পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর সঙ্গে নিজের ছেলের বাল্যবিবাহ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার বাড়ির অবস্থা খুব একটা ভালো না। বিশেষ করে আমার মায়ের খুব শরীর খারাপ। মায়ের ইচ্ছা নাতি ছেলের বউ দেখার। মায়ের ইচ্ছা পূরণ করার জন্যই ছেলের সঙ্গে ছাত্রীর বিয়ে দিয়েছি। তবে বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়নি। বেগমপুর দাখিল মাদরাসার শিক্ষক ও বেগমপুর ইউনিয়নের কাজি মফিজুল ইসলাম ধর্মীয় রীতি মেনে বিয়ে দিয়েছেন।