নেপালের কন্ট্রোল টাওয়ারেরও ত্রুটি ছিল

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

ইউএস-বাংলার বিমান দুর্ঘটনার চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে নেপাল। প্রতিবেদনে পাইলট মানসিক চাপে থাকা, ল্যান্ড করতে ভুল করাসহ কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। গত রোববার প্রকাশিত নেপালের ৪৩ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে একপেশেভাবে পাইলটকে দোষারোপ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন গ্রুপ অব বাংলাদেশ (এএআইজি-বিডি)।

আজ সোমবার বিকেলে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তুলেন এএআইজি-বিডি’র প্রধান ক্যাপ্টেন সালাহ্উদ্দিন এম রহমতউল্লাহ।

নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) টাওয়ার সংক্রান্ত অ্যামেইনমেন্ট বাংলাদেশ থেকে দেয়া হয়েছে বলেও জানান ক্যাপ্টেন সালাহ্উদ্দিন এম রহমতউল্লাহ।

তিনি বলেন, নেপালের তদন্ত প্রতিবেদনে যা উঠে এসেছে তা ঠিক আছে। তবে পাইলটকে একপেশেভাবে দায়ী করা হয়েছে। কিন্তু এটিসির যে ত্রুটি ছিল এগুলো উঠে আসেনি। পাইলট ল্যান্ড করতে অ্যাপ্রোচ মিস করেছিলেন। কিন্তু এটিসি পাইলটকে সহায়তা করতে পারত, তারা তা করতে পারেনি। বরং বিমানটি যখন এটিসি টাওয়ায়ের কাছ দিয়ে যেয়ে বিধ্বস্ত হয় তখন এসিটি টাওয়ারের কর্মকর্তারা টেবিলের নিচে আশ্রয় নেন।

সংবাদ সম্মেলনে বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম নাঈম হাসান বলেন, অনেক সময় পাইলটরা দিক হারিয়ে ফেলেন। এটা প্রায় ঘটে। নেপালে পাহাড়ঘেরা বিমানবন্দর হওয়ায় এ ঝুঁকি বেশি। সেদিন পাইলট দিক হারিয়ে ফেলেছিলেন। পাইলট কোনো কারণে অ্যাপ্রোচ মিস করেছিলেন। তবে তাকে সহায়তা করার দায়িত্ব ছিল এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারের। নেপালের এটিসি সেটি করেনি।

নেপালের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পাইলট আবিদ ইউএস বাংলার এয়ারলাইন্সে এক নারী সহকর্মীর ব্যবহারে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন এবং রাতে তার ঠিকভাবে ঘুম হয়নি। অন্যদিকে কো-পাইলট প্রথমবারের মতো ওই ফ্লাইটে ছিলেন।

তবে উড়োজাহাজের কোনো ত্রুটি পায়নি নেপালের তদন্ত কমিটি। এ ছাড়া তদন্ত প্রতিবেদনে বেবিচকের জন্য দুটি, ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ১১টি এবং নেপালের সিভিল এভিয়েশনের জন্য দুটি সেফটি সংক্রান্ত পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১২ মার্চ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বোমবার্ডিয়ার ড্যাশ ৮কিউ৪০০ উড়োজাহাজটি নেপালে কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে অবতরণ করার সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়। উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত হন ৫১ জন। নিহতদের মধ্যে ২৮ জন বাংলাদেশি, ২২ জন নেপালি ও এক জন চীনা নাগরিক ছিলেন। নিহত হন ফ্লাইটের সহকারী পাইলট পৃথুলা রশিদ। আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর মারা যান পাইলট ক্যাপ্টেন আবিদ।