নেইমার ও রিয়াল মাদ্রিদের গল্পটা দিন দিন রূপ বদলে মহাকাব্যে রূপ নিচ্ছে। প্রতি মৌসুমেই রিয়ালে যোগ দিচ্ছেন নেইমার—এমন গুঞ্জনে ভারী হয়ে ওঠে দলবদলের বাজার। এবার তো মৌসুমের মাঝপথেই শুরু হয়ে গেছে সে আলোচনা। এমন পর্যায়ে গেছে যে লিগের ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনেও জিনেদিন জিদানকে কথা বলতে হচ্ছে নেইমারকে নিয়ে। ভাবতে হচ্ছে রোনালদো-নেইমার জুটি নিয়েও!
নেইমার ও রিয়ালের গল্পের বয়স এক যুগ হতে চলেছে। ১৪ বছরের নেইমারকে কেনার সুযোগ পেয়েও নেয়নি রিয়াল। এরপর আরও তিনবার সুযোগ এসেছে রিয়ালের সামনে। কিন্তু প্রথমে বার্সেলোনা ও পরে পিএসজিতে যোগ দিলেও রিয়ালের জার্সি গায়ে তোলা হয়নি নেইমারের। তবে পিএসজিতে রেকর্ড গড়ে যোগ দেওয়ার পর থেকেই নতুন করে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। আর মার্শেইয়ের বিপক্ষে চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে আসার পর থেকে তো সবাই মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গেছেন, রিয়ালে আসছেনই নেইমার।
এমন আলোচনার ফাঁকে একটি শঙ্কাও জেগেছে রিয়াল সমর্থকদের মাঝে। নেইমার যদি যোগ দেন, তবে দলের মূল খেলোয়াড় খুশি হবেন তো? ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে খুশি রেখে নেইমারকে দলে টানা সম্ভব কি না, এ নিয়েও সন্দেহ আছে। এ ছাড়া মাঠে নেইমার-রোনালদো কীভাবে একত্রে খেলবেন, সেটা নিয়েও প্রশ্ন জাগে। কারণ, ইদানীং ডি-বক্সেই বেশি দেখা গেলেও মাঠের বাঁদিকেই খেলতে পছন্দ করেন রোনালদো। নেইমারও মাঠের ওই প্রান্তে খেলেন। জিদানকেও তাই এ প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে। রিয়াল কোচের দাবি, দুজনে ভালোভাবেই খেলতে পারবেন এক দলে, ‘ভালোদের মধ্যে রসায়ন এমনিতেই ভালো হয়। ক্রিস্টিয়ানোর সঙ্গে খেলতে পারবে কি না (নেইমার)? ভালো খেলোয়াড়েরা সব সময় মানিয়ে নেয়। অনেকে বলত, আমি আর ইয়োরকেফ (বিশ্বকাপ ও ইউরোজয়ী ফ্রেঞ্চ মিডফিল্ডার) একসঙ্গে খেলতে পারব না। মাঠের বাইরে যা–ই হোক না কেন, মাঠে আমরা দারুণ ছিলাম।’
জিদানের এমন কথায় মনে হতেই পারে, রিয়ালে বোধ হয় এসেই পড়েছেন নেইমার। তবে জিদান জানালেন ভিন্ন কথা, ‘আমি জানি না ক্লাব নেইমারের সঙ্গে কথা বলছে কি না। তবে আমি ওকে নেওয়ার কথা বলিনি। আশা করি, মৌসুম ভালোভাবে শেষ করব আমরা। এবং এসব বিষয় নিয়ে পরে কথা হবে।’
পিএসজিতে নেইমারকে নিয়ে ক্লাবের অতিরিক্ত খাতিরযত্নে সতীর্থরা বিরক্ত হয়ে উঠেছিল। ফলে দলের মধ্যে বিভক্তির কথাও শোনা গেছে। নেইমারকে নিয়ে এখনই কথাবার্তা যেভাবে শুরু হয়েছে, রিয়ালেও এমন ঘটনা ঘটতে পারে। জিদান এ নিয়ে চিন্তিত নন, ‘নেইমার নিয়ে কথাবার্তা আমাদের বিরক্ত করে না।’