নেইমারের নৈপুণ্যে টানা ষষ্ঠ জয় ব্রাজিলের

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

এ যেন ঠিক আগের ম্যাচেরই কার্বন কপি। ইকুয়েডরের বিপক্ষে গোল করে ও করিয়ে দলকে জয় এনে দিয়েছিলেন নেইমার। এদিন প্যারাগুয়ের বিপক্ষেও সেই একই চিত্র। গোল করলেন এবং করালেন। ফলে আরও একটি সহজ জয় পেল ব্রাজিল। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে দলটি।

বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে স্তাদিও দিফেনসোরেস দেল চাকোতে প্যারাগুয়েকে ২-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে ব্রাজিল। ম্যাচের শুরুতেই নেইমারের গোলে এগিয়ে যায় পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। যোগ করা সময়ে অপর গোলটি করেন বদলি খেলোয়াড় লুকাস পাকুয়েতা।

এ জয়ে ৬ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান আরও মজবুত করল ব্রাজিল। সমান ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে আছে প্যারাগুয়ে। তবে বলিভিয়ার বিপক্ষে জয় পেলে তাদের ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে চিলির। কলম্বিয়ার বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করা আর্জেন্টিনা সমান ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে আছে দ্বিতীয় স্থানে।

ঘরের মাঠে এদিন ব্রাজিলের বিপক্ষে প্রায় সমান তালেই লড়াই করে প্যারাগুয়ে। বলের দখলও ছিল একেবারে সমান সমান। তবে ১০টি শট নিলেও গোল করার মতো ভালো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি স্বাগতিকরা। অন্যদিকে ১৩টি শট থেকে দুটি গোল আদায় করে নেয় সেলেকাওরা।

অবশ্য গোল করার মতো প্রথম সুযোগটা পেয়েছিল প্যারাগুয়েই। দ্বিতীয় মিনিটেই মিগেল আলমিরনের শট দানিলো ব্লক না করলে এগিয়ে যেতে পারতো স্বাগতিকরা। এর দুই মিনিট পরই গোল পায় ব্রাজিল। ডান প্রান্ত থেকে গ্যাব্রিয়েল জেসুস কাটব্যাক করেছিলেন রিচার্লসনের উদ্দেশ্যে। ঠিকভাবে ধরতে পারেননি এভারটনের এ ফরোয়ার্ড। তার পায়ে বল লেগে ফাঁকায় চলে যায় নেইমারের কাছে। বল ধরে দেখে শুনে সময় নিয়ে বল জালে পাঠান বিশ্বের সবচেয়ে দামী এ খেলোয়াড়।

অষ্টম মিনিটে দূরপাল্লার বুলেট গতির শট নিয়েছিলেন ওমর আলদেরাত। তবে ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে সে যাত্রা দলকে রক্ষা করেন ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক এদেরসন মোয়ারেস। ১৩তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সহজ এক সুযোগ নষ্ট করেন রিচার্লিসন। ডান প্রান্ত থেকে ফ্রেডের বাড়ানো দারুণ থ্রু পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিলেন তিনি। সময়ও পেয়েছিলেন। কিন্তু ভালো শট নিতে পারেননি। গোলরক্ষক বরাবর শট নিলে নষ্ট হয় সে সুযোগ।

২৪তম মিনিটে সমতায় ফেরার সুযোগ ছিল প্যারাগুয়ের। রবার্ট রোজাসের পাস থেকে নেওয়া আলমিরনের শট দারুণ দক্ষতায় ব্লক করেন এদের মিলিতাও। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে বল জালে জড়িয়েছিলেন রিচার্লিসন। তবে অফসাইডের কারণে বাতিল হয় সে গোল। তাতে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় ব্রাজিল।

৪৮তম মিনিটেও সমতায় ফেরার সুযোগ ছিল স্বাগতিকদের। থোইন থেকে ভালো হেড নিয়েছিলেন গুস্তাভো গোমেজ। তবে এবারও বাঁধা হয়ে দাঁড়ান গোলরক্ষক এদেরসন। ছয় মিনিট পর নিজেদের অর্ধ থেকে তিন খেলোয়াড়কে কাটিয়ে জেসুসকে দারুণ এক পাস দিয়েছিলেন নেইমার। কিন্তু শট নিতে দেরি করায় তা ব্লক করেন প্যারাগুয়ের এক খেলোয়াড়। পরের মিনিটে কর্নার থেকে একেবারে ফাঁকায় হেড নেওয়ার সুযোগ পেয়েও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি মার্কোইনহোস।

৫৯তম মিনিটে রিচার্লিসনের দূরপাল্লার শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক প্যারাগুয়ে গোলরক্ষক অ্যান্তনি সিলভা। ছয় মিনিট পর অবিশ্বাস্য এক মিস করেন নেইমার। জেসুসের পাসে ডান প্রান্তে একেবারে ফাঁকায় বল পেয়েও বাইরে শট নেন এ পিএসজি তারকা। পাঁচ মিনিট পর নেইমারের পাস থেকে গোল করার সুযোগ ছিল জেসুসেরও। তবে দারুণ ট্যাকলে বিপদমুক্ত করেন গোমেজ।

৮৭তম মিনিটে আলবার্তো এস্পোনোলার শট ফের ঠেকিয়ে প্যারাগুয়ের হতাশা বাড়ান ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক এদেরসন। ম্যাচের যোগ করা সময়ে ব্যবধান বাড়ায় অতিথিরা। নেইমারের কাছ থেকে বল পেয়ে দারুণ এক কোনাকুনি শট নেন পাকুয়েতা। বারপোস্টে লেগে বল জড়ায় জালে। ফলে দারুণ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল।