নীতির প্রশ্নে কোন আপস নয় : প্রধানমন্ত্রী

:
: ৬ years ago

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের মধ্যে আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে গ্রেফতারের ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহল থেকে অনেক ‘চাপ’ এসেছে। কিন্ত তাতে নতি স্বীকার করিনি। তিনি বলেন, নীতির প্রশ্নে কোন আপোষ চলবে না, দেশের স্বার্থে কোনো ছাড় নেই। আমার বাবা, আমার মায়ের কাছ থেকে শিখেছি, নীতির প্রশ্নে আপস নেই। এটা আমার সাফ কথা।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শুক্রবার বিকেলে গণভবনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তৃতাকালে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।

ছাত্রলীগের সভাপতি মো. রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের সভাপতিত্বে এ আলোচনা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।

নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে গণভবনের আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা বলেন, কোমলমতি শিশুরা রাস্তায় নেমেছে। শিশুদের ক্ষোভ, বিক্ষোভ; তাদের যে বিক্ষুব্ধ মন, সেটাকে কাজে লাগিয়ে ওই শিশুদের ঘাড়ে পা দিয়ে ফায়দা লুটবার জন্য একদল নেমে পড়ল।

শহিদুল আলমের নাম উল্লেখ না করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকে অনেক জ্ঞানী-গুণী, অনেক অনেক আঁতেল, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্নরা কী করেছে? ডিজিটাল বাংলাদেশ আমি করে দিয়েছি আর তারই সুযোগ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে এবং বিভিন্ন জায়গায় অপপ্রচার চালিয়ে মানুষকে মিথ্যা প্রচার চালিয়েছে।

মিথ্যা প্রচারের’ কারণে শিশুদের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়তে পারত, সে কথা না ভেবে শিশুদের বিক্ষোভকে ব্যবহার করে ‘ফায়দা লোটার’ চেষ্টা হয়েছিল। তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে যখন ব্যবস্থা নিলাম, তখনই চারিদিকে যেন হাহাকার। আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকেও বিভিন্ন রকম চাপ। দেশে-বিদেশে সবার মাথায় রাখা উচিত।

স্কুল জীবন থেকে প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা আলোচনা সভায় বলেন, ‘আইয়ুব খান পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ছিল। স্কুলে একটা চ্যাপ্টার ছিল পাকিস্তান চ্যাপ্টার, ২০ নম্বর। আমি মেট্রিক পরীক্ষা দিয়েছিলাম ওই ২০ নম্বর বাদ দিয়ে। কারণ আমি আইয়ুব খানের প্রশংসা লিখব না, আমি লিখতে পারি না। কাজেই আমি সেই মানুষ। ২০ নম্বরের জন্য ফেলও করতে পারতাম।’

শেখ হাসিনা বলেন, ছাত্র রাজনীতি করলেও সে সময় তিনি নেতা হননি। সংগঠনের প্রয়োজনে যেখানে দায়িত্ব দিয়েছে, সেখানে দায়িত্ব পালন করেছেন তারা সব ভাই-বোন। আওয়ামী লীগ যখন সভাপতি বানাল তখনই দায়িত্বে এসেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের জন্য রাজনীতি করেছি। যে দুঃখী মানুষের জন্য আমার বাবা, মা, ভাইবোন জীবন দিয়ে গেছেন, তাদের জন্য কাজ করি।

তিনবার ক্ষমতায় থাকলেও নিজের ওই অবস্থান বদলায়নি দাবি করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমিতো আমাকে পরিবর্তন করিনি। তাঁতের শাড়ি বাদ দিয়ে শিফন শাড়ি পরিনি, এই মেকাপ ওই মেকাপ করতে হবে ভাবিনি, মাথা চুল খাড়া করতে হবে সেটাও করিনি।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকে নিজের ভাগ্য বদলের জন্য রাজনীতি করে, কেউ কেউ সামাজিক মর্যাদা বাড়ানোর জন্য, আবার কেউ ভোগ বিলাসের জন্য রাজনীতি করে। তিনি বলেন, যারা জনগণের জন্য রাজনীতি করে, ইতিহাস তাদের মূল্যায়ন করে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের মানুষের জন্য রাজনীতি করেছেন। যে কারণে তাকে হত্যার পর ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা হলেও তার আদর্শ মুছে ফেলা যায়নি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মেনে চললে দেশের উন্নয়ন সম্ভব। আওয়ামী লীগ সরকার দেশের উন্নয়নে জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ আমরা করে দেশকে অগ্রগতির দিকে নিয়ে যাচ্ছি।

ছাত্রলীগকে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, একটি আদর্শিক সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে হবে ছাত্রলীগকে। আদর্শের পতাকা ধারণের মাধ্যমেই দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।