একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চান না জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। বয়স ও অসুস্থতার কারণে নির্বাচন থেকে দূরে থাকছেন বলে জানান বর্ষীয়ান এই নেতা। তবে দল ও জোটের নেতারা তাকে নির্বাচনে প্রার্থী হতে অনুরোধ করছেন।
সোমবার পর্যন্ত ড. কামাল এ বিষয়ে তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাননি। তবে তিনি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন না করলেও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় এলে তাকে রাষ্ট্রপতি করার ব্যাপারে জল্পনা-কল্পনা চলছে। কিন্তু ড. কামাল নির্বাচন এবং রাষ্ট্রীয় কোনো পদে যেতেও রাজি নন বলে জানিয়েছেন সমকালকে।
ড. কামাল হোসেন সোমবার বলেন, ‘আমরা একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কথা বলে আসছি। কে হারল, কে জিতল- সেটা বড় কথা নয়। আমার নির্বাচনে অংশ নেওয়াটাও বড় নয়। দেশের মালিক জনগণ, তারা যেন নিজেদের পছন্দ মতো ভোট দিতে পারে, দেশে ভারসাম্যের নীতি প্রতিষ্ঠা হবে- সেটাই বড় কথা।’
কী কারণে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না- তা না বললেও বয়স এবং শারীরিক অসুস্থতার বিষয়েই ইঙ্গিত দেন ড. কামাল। এর আগেও নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ব্যাপারে জানিয়েছিলেন তিনি।
সূত্র জানায়, শেষ পর্যন্ত ড. কামাল নির্বাচন করতে রাজি হলে তাকে ঢাকা-১০, ঢাকা-১৪ ও ঢাকা-১২ আসনের মধ্যে যে কোনো একটিতে জোটগত মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে। আবার নির্বাচন না করলে জোট ক্ষমতায় এলে যে কোনো একটি আসন থেকে উপ-নির্বাচনেও তাকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করার চেষ্টা করার চিন্তাভাবনাও রয়েছে।
গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী সোমবার সমকালকে বলেন, বয়সের কারণে ড. কামাল হোসেন নির্বাচনে অংশ নিতে চান না। সবাই তাকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান। তবে শেষ পর্যন্ত তিনিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
১৯৭০ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তান থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছিলেন ড. কামাল হোসেন। ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তিনি পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্তি পান। একই বছর স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান রচনা কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭২ সালে আইনমন্ত্রী এবং ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে নির্বাচনী ফল নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের সঙ্গে ড. কামালের মতবিরোধ দেখা দেয়। ১৯৯৩ সালে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই আইনজীবী আওয়ামী লীগ ত্যাগ করে গণফোরাম প্রতিষ্ঠা করেন।