বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার নির্বাচন কমিশনের সাবেক উপসচিব সামছুল আলমকে তিন দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। শেরেবাংলা নগর থানা-পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম আজ বুধবার এই আদেশ দেন।
এর আগে সামছুল আলমকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সনজিৎ কুমার ঘোষ। রিমান্ডে নেওয়ার আবেদনে বলা হয়, দুই বছর আগে (২০১৬) নির্বাচন কমিশনের উপসচিব পদ থেকে অবসরে যান। সামছুল আলম গত ৩১ ডিসেম্বর বিকেল ৫টায় তাঁর মুঠোফোন থেকে নির্বাচন কমিশনের অফিস সহকারী মুহাম্মদ আমজাদ হোসেনকে ফোন করেন। আমজাদ ফোনটি নির্বাচন কমিশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা অরবিন্দ দাশের কাছে দিতে বলেন। সামছুল আলম তখন অরবিন্দ দাশের কাছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বেসরকারি প্রাথমিক ফলাফলের গেজেট প্রকাশের আগে বার্তাশিট চান। অরবিন্দ তখন সামছুলকে জানান, বার্তাশিট তৈরি করতে আরও দুই ঘণ্টা সময় লাগবে। আর গেজেট প্রকাশের আগে বার্তাশিট বা কোনো প্রকার তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়।
এ ঘটনায় নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তা অরবিন্দ সাবেক উপসচিব সামছুল আলমের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে গতকাল মঙ্গলবার শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। মামলায় পরস্পর যোগসাজশে সরকারি সম্পত্তি ও জানমালের ক্ষতি করার জন্য অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করার অপচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়। এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সাবেক উপসচিব সামছুলকে নির্বাচন কমিশন সচিবের একান্ত সচিবের (পিএস) কক্ষ থেকে ৩১ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে পাঁচটায় আটক করা হয়।
মামলার এজাহারে বাদী অরবিন্দ দাশ বলেন, সামছুলকে নির্বাচন কমিশনে আসার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একেকবার একেক ধরনের বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দেন। সামছুলকে বার্তাশিট দেওয়া সম্ভব নয় বলা সত্ত্বেও তিনি অবৈধ উপায়ে বার্তাশিট সংগ্রহ করার জন্য অবৈধভাবে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের মতো সংরক্ষিত স্থানে অনধিকার প্রবেশ করেছেন।
এজাহারে বলা হয়, অজ্ঞাতনামা আসামিদের ইন্ধন ও সহায়তায় গেজেট প্রকাশের আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফলের বার্তাশিট বা নির্বাচনসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে উসকানিমূলক তথ্য উপস্থাপন করে সরকারি সম্পত্তি ও জানমালের ক্ষতি করার জন্য অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করার উদ্দেশ্য ছিল সামছুলের।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রিমান্ডে নেওয়ার আবেদনে বলেন, এ ঘটনার বিষয়ে সরেজমিন প্রকাশ্য ও গোপনে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, আসামি সামছুল বিএনপি ও সমমনা দলের অন্য সদস্যদের মদদে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল নিজেদের পক্ষে নেওয়ার চেষ্টায় এবং অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করার জন্য এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন। আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার বিষয়ে তিনি অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেন। মামলার ঘটনার নেপথ্যে জড়িত অন্য আসামিদের সম্পর্কে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করার জন্য আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।
সামছুল আলমকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন বাতিল চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী আয়ুবুর রহমান। হয়রানি করার জন্য তাঁর মক্কেলকে এ মামলার আসামি করা হয়েছে বলে দাবি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামি সামছুলের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা সনজিৎ কুমার ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, আসামি সামছুলকে নির্বাচন কমিশন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com