জাতীয় নির্বাচনের আগে ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিবে সরকার। এর মধ্যে পাঁচ হাজার চিকিৎসক আগামী তিন মাসের মধ্যে নিয়োগ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
রোববার বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম-বিএইচআরএফ এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন-বিএমএ’র যৌথ আয়োজনে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ কথা জানান। বিএমএর ভবনে এ প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আমাদের সম্পদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তাই কাজের ক্ষেত্রে অনেক অভিযোগও থাকে। যারা কাজ করে তাদের কিছু ভুল হবেই। তবে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেয়ার সাড়ে চার বছরের ভুল হলেও বড় কোনো ভুল বা অভিযোগ হয় নাই।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে সব শ্রেণির মানুষ সরকারি চিকিৎসা সেবার ওপর নির্ভরশীল। আমরাই একমাত্র দেশ যেখানে নামমাত্র মূল্যে চিকিৎসা সেবা দেই। আমদের এ সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা হলো লোকবলের ঘাটতি। সরকারের শেষ সময়ে এসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে পিএসসির (সরকারি কর্মকমিশন) মাধ্যমে ৫ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হবে। বিষয়টি চূড়ান্ত। পিএসসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে ২/৩ মাস সময় লাগবে।
যাদের নেয়া হবে তাদের গ্রামে নিয়োগ দেয়া হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে চিকিৎসকরা তাদের পছন্দমতো এলাকায় কাজ করতে পারবেন। এছাড়াও নির্বাচনী ওয়াদা আছে। তাই আগামী নির্বাচনের আগে আরও ৫ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিবো। এ ১০ হাজার চিকিৎসক পদায়ন করতে পারলে গ্রামে-গঞ্জে আর চিকিৎসা ব্যবস্থার সংকট থাকবে না।
গ্রামে এখন নার্সের সংকট নেই উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা ১০ হাজার নার্স নিয়োগ দিয়েছি। আগামীতে আরও ৪ হাজার নার্স নিয়োগ হবে। আশা করছি, গ্রামে নার্সের আর সমস্যা থাকবে না। এছাড়াও আগামীতে ৪০ হাজার তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ দিবে সরকার। এটিও চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়নে কাজ করছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনের দিন আধুনিক মানের বার্ন ইউনিট চালু করা হবে। ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের (পিজি হাসপাতাল) পাশে ১ হাজার বেডের একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর হাসপাতালটির কাজ উদ্বোধন করবেন।
চাপে পরে বিভিন্ন সময় ভুল চিকিৎসা হয়। আর ভুলত্রুটির কারণে চিকিৎসকদের ওপর হামলাও হয়। তাই চিকিৎসকদের সুরক্ষায় নতুন আইন করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
বেসরকারি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, বেশ কিছু বেসরকারি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা নিয়মনীতি না মেনে কাজ পরিচালনা করছে। আমরা মেডিকেলগুলোর উদ্যোক্তাদের সতর্ক করেছি। তারা সংশোধন না হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
মিট দ্য প্রেসে উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব হাবিবুর রহমান খান, বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এবং মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল, বিএইচআরএফ-এর সভাপতি তৌফিক মারুফ এবং সাধারণ সম্পাদক নিখিল মানকিন প্রমুখ।