যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণের বাকি আর মাত্র চারদিন। এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দেশটিতে আবারও হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি মার্কিন আইনপ্রণেতারাও আপ্রাণ চেষ্টা করছে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকানোর।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্যমতে, গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রে করোনা রোগী শনাক্তের সংখ্যা ৯০ লাখ ছাড়িয়েছে। আর মারা গেছেন ২ লাখ ২৯ হাজারেরও বেশি।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, দেশটিতে সংক্রমণ শুরুর পর থেকে দ্রুততম সময়ে ১০ লাখ রোগী শনাক্তের রেকর্ড হয়েছে এ মাসে। সবশেষ ১৪ দিনেই সেখানে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ থেকে ৯০ লাখে পৌঁছেছে।
রয়টার্সের হিসাবে, যুক্তরাষ্ট্রে একদিনে সর্বোচ্চ রোগী শনাক্তের নতুন রেকর্ডও হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। এদিন অন্তত ৯১ হাজার ২৪৮ জন নতুন করে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন।
বেড়েছে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যাও। অক্টোবরে দেশটির হাসাপাতালগুলোতে করোনা রোগী ভর্তির হার বেড়েছে ৫০ শতাংশেরও বেশি।
এদিকে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের শেষমুহূর্তে এভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে শুরু করায় দুই পক্ষের কাছেই প্রচারণার প্রধান ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে সেটি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুরু থেকেই করোনাভাইরাসকে হেলাফেলা করেছেন। পরে নিজেই আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে হোয়াইট হাউসে তার সহকর্মীদের মধ্যেও।
তবে মহামারি নিয়ে এখনও নিজের অবস্থান বদলাননি এ রিপাবলিকান নেতা। তার নির্বাচনী সমাবেশগুলোতে সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই বললেই চলে। সেখান থেকে ব্যাপক হারে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে ট্রাম্পের দাবি, দেশে করোনা মহামারি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। গত শুক্রবারও তিনি এক টুইটে বলেছেন, যত বেশি পরীক্ষা, তত বেশি আক্রান্ত। আমাদের পরীক্ষা সবার সেরা। মৃত্যু অনেক কম।
তবে নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন তার প্রচারণায় করোনা ইস্যুকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছেন। তার বেশিরভাগ সমাবেশই হচ্ছে ‘ড্রাইভ ইন’ পদ্ধতিতে, অর্থাৎ সমর্থকেরা গাড়িতে বসেই সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন।
এছাড়া, মহামারি প্রতিরোধে ট্রাম্প প্রশাসনের ঘাড়ে ব্যর্থতার দায় চাপিয়েছেন এ ডেমোক্র্যাট নেতা। সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার যথেষ্ট ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
সূত্র: আল জাজিরা