নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে নীরবে বরিশাল ফিরলেন সাদিক আব্দুল্লাহ

:
: ৬ years ago

সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর বরিশালে আগমনকে কেন্দ্র নানা আয়োজনের চেষ্টা ছিল কর্মী-সমর্থকদের মাঝে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সকলের আশা পূরণ হওয়ায় প্রিয় নেতাকে বরণ করতে সংবর্ধনা ও শোডাউন করার ভাবনায় ছিল সকলে। নেতা কখন ঢাকা থেকে আসছেন, তাকে কখন আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করা হবে এমনটি সর্বত্র আলোচনা হচ্ছিল। বিশেষ করে এই নেতার অনুসারীদের ভাবনাও ছিল সে ফিরলে বড় ধরনের শোডাউনের মাধ্যমে তাকে বরণ করে নেওয়া হবে। কিন্তু সেই ভাবনার প্রতিফলন ঘটেনি। সাদিক আবদুল্লাহ ফিরলেন, তবে নীরবে।

বরিশালে সাদিকের নীরব প্রবেশের কারণ হিসেবে দলীয় নেতৃবৃন্দ শোডাউন করে নগরবাসীকে ভোগান্তিতে না ফেলার কথা বলছেন। তবে নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী রাজনৈতিক দল মনোনিত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন-পূর্ব সময়ে প্রার্থীর পক্ষে শোডাউন কিংবা মিছিল করলে তাতে আচরণবিধি লঙ্ঘিত হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধিমালা-২০১৬ এর গেজেটে ১২ এর ২নং পয়েন্টে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ আছে, নির্বাচন-পূর্ব সময়ে কোন প্রকার মিছিল বা কোনরূপ শো-ডাউন করা যাইবে না। নির্বাচনের আচরণবিধির প্রতি সম্মান জানিয়ে সাদিক আবদুল্লাহ বরিশালে প্রবেশের এ কৌশল অবলম্বন করেছেন বলেও অনেকে মন্তব্য করেছেন।

 

সূত্র মতে, গতকাল রবিবার বিমানযোগে বরিশালে ফিরেছেন মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও আ’লীগ মনোনিত বিসিসির মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। তার বরিশাল আগমন সম্পর্কে অধিকাংশ নেতা-কর্মীই জ্ঞাত ছিলেন না। যে কারণে কোন প্রকার শো-ডাউন বা সংবর্ধনার আয়োজন ছাড়াই কালিবাড়ি রোডস্থ বাসভবনে আসেন তিনি। বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, নগরবাসীর যাতে কোনো ধরনের ভোগান্তি না হয় সে জন্যই সাদিক আব্দুল্লাহ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নেতা-কর্মীরা যাতে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে গিয়ে জনভোগান্তির সৃষ্টি না করে তাই তিনি একাকী বাস ভবনে এসেছেন। নগরীর বাসিন্দারা বলেন, বিগত দিনে সাদিক আব্দুল্লাহ মানুষের দুঃখ, দুর্দশায় পাশে থেকেছেন। তাই তার এ উদ্যোগকেও স্বাগত জানিয়েছেন সকলে।

তার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ সিটি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হওয়ার নিশ্চয়তা পেয়েছেন। গত ২২ জুন রাজধানীতে বরিশাল সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করেন সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মনোনয়নের বিষয়টি ঘোষণা হওয়ার পরে সাদিকের সঙ্গে থাকা অনুসারী নেতাকর্মীরা বরিশালে ফেরেন। কিন্তু সাদিক রাজধানীতে অপেক্ষা করছিলেন পরিবার নিয়ে ফেরার জন্য।

এদিকে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কার্যালয়ে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে নির্বাচনের প্রস্তুতি। দু’দলের জনপ্রিয় দু’ নেতা প্রার্থী হওয়ায় নেতা-কর্মীদের মাঝে বাড়তি প্রস্তুতি লক্ষ্য করা গেছে। নগরীর প্রবীন ভোটারদের সাথে আলোচনা করে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র ভোটারদের বাইরে সাধারন ভোটারদের মন যে জয় করতে পারবে সেই বসবেন নগরপিতার আসনে। কেননা আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রয়াত শওকত হোসেন হিরন বরিশাল নগরীতে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করলেও ২০১৩ সালের নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আহসান হাবিব কামালের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন ১৭ হাজার ভোটের ব্যবধানে।

২০১৪ সালে শওকত হোসেন হিরনের মৃত্যুর পর মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দেয়। সে সময়ে সাদিক আব্দুল্লাহ যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতার পদে থাকলেও দিন-রাত সমানতালে নেতা-কর্মীদের পাশে থেকে আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়। কমিটিতে অ্যাডভোকেট গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলালকে সভাপতি, অ্যাডভোকেট কেএম জাহাঙ্গীরকে সাধারন সম্পাদক করা হয়। ঐ কমিটিতে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে যুগ্ম সাধারন সম্পাদক করা হয়। সেই থেকে দলকে সু-সংঘটিত করতে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে ৩০টি ওয়ার্ডে সভা করে নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করতে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেন সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।