নিরবে সেবা দিয়ে গেলেন এসি মাসুদ রানা

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

বাংলাদেশ পুলিশের সৎ, সাহসী,নিষ্ঠাবান ও জনবান্ধব পুলিশ কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ মাসুদ রানা।

কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষে ৩৫-তম বিসিএস পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়ে মানব সেবার তীব্র ব্রত নিয়ে ২০১৭সালের ২রা মে যোগদান করেন পুলিশ বাহিনীতে।

রাজশাহীর সারদায় পুলিশের মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাসিং আউট প্যারেডের কমান্ডারের নেতৃত্ব প্রদান করেন।

২০১৮সালের ১০ই ডিসেম্বর সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে যোগদান করেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশে। এরপর তিনি এসি হিসেবে দ্বায়িত্ব গ্রহণ করেন ট্রাফিক বিভাগে।

ট্রাফিক বিভাগের পাশাপাশি এসি ফোর্স হিসেবেও দ্বায়িত্ব পালন করেন । নিজের বিচক্ষণতা কাজে লাগিয়ে জনগণের সেবা প্রদান করার পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদের কল্যান ও শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করেন দীর্ঘ দিন।

আন্তরিকতার সাথে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ফোর্সদের শারীরিক ও মানসিক ভাবে উজ্জীবিত রাখতে ক্রিকেট ফুটবলসহ বিভিন্ন খেলা ধূলার আয়োজন করেন।

এসি ট্রাফিক হিসেবে কর্মরত থাকাকালীন মহামারী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে তার অবদান ছিল চোখে পড়ার মতো। সরকারি নির্দেশে গণপরিবহন স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিত করতে কাজ করেছেন বিরতিহীন।

চালক যাত্রী ও পথচারীদের মাস্ক পড়া নিশ্চিত করতে সচেতন করার পাশাপাশি ট্রাফিকের পক্ষ থেকে বিতরণ করেছেন মাস্ক, হ্যান্ডস্যানিটাইজারসহ করোনা প্রতিরোধ সামগ্রী ।

এছাড়াও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও চাঁদাবাজী প্রতিরোধে অভিযান পরিচালনা করেছেন রুপাতলী ও নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ড এলাকায়।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অন্তরা পরিবহনে চাঁদা বাজী করার সময় ২জনকে আটক করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

এরপর এসি কাউনিয়া হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করার পর যোগদান করেন এসি এয়ারপোর্ট হিসেবে । দ্বায়িত্বভার গ্রহণ করার পর থেকেই থানা এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, মাদক, ইভটিজিং, নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন আপসহীন নীতির অনুসারী।

বিএমপি কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান বিপিএম বার এর নির্দেশে জনগণের দোরগোড়ায় হয়রানি মুক্ত নির্ভেজাল পুলিশি সেবা পৌঁছে দিতে থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ প্রদান করেন।

থানাকে ভুক্তভোগীদের প্রকৃত সেবা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করেছেন নিরলস। সততা ও দক্ষতার সাথে নিজের উপর অর্পিত দ্বায়িত্ব পালন করেছেন প্রতিটি মূহুর্তে ।

সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে ঝালকাঠি জেলা পুলিশে বদলী হওয়ার পূর্বে মোঃ মাসুদ রানা বিএমপি কমিশনারের স্টাফ অফিসার হিসেবেও কর্মরত ছিলেন ।

বদলী জনিত বিদায় বেলায় তার জনবান্ধব কৃতকর্মের প্রশংসা করেছেন সহকর্মী ও সেবা গ্রহণ করা ভুক্তভোগী মানুষগুলো।

কাউনিয়া জোনে দ্বায়িত্ব পালনকালীন অসহায় এক স্কুল শিক্ষকের ক্রয়কৃত জমির ভোগদখলে বাঁধা প্রদানকারীদের ও চলাচলের পথ অবরোধসহ কলেজ পড়ুয়া মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রভাবশালীদের কঠোর হস্তে দমন করেছেন।

এছাড়াও এয়ারপোর্ট থানা এলাকায় ছেলে কর্তৃক গর্ভধারিনী মায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠা ২ভাইয়ের দ্বন্দ্ব নিরসনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।

ভুক্তভোগী মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মানুষের চলাচলে বাঁধা তৈরি করার জন্য বাড়ির আসপাশে ছেলের বসানো ২৭টি সিসি ক্যামেরা ও ল্যাপটপ জব্দ করে নিরসন করেন পারিবারিক দ্বন্দ্ব।

তবে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশে পাওয়া না পাওয়ার হিসেব করতে রাজি নয় জনবান্ধব এই পুলিশ কর্মকর্তা।

বিএমপি কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকট থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা কাজে লাগিয়ে আজীবন মানুষের কল্যানে নিয়োজিত থাকার কথা জানালেন ঝালকাঠিতে সদ্য যোগদান করা সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ মাসুদ রানা।

বিএমপি থেকে সদ্য বিদায়ী এই পুলিশ কর্মকর্তা প্রকৃত সেবক হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করে ভুক্তভোগীদের ভালোবাসা ও আস্থা অর্জন করুন এমনটাই প্রত্যাশা সহকর্মীসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষের।