নারায়ণগঞ্জ শহরের আমলাপাড়ায় অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে (আমলাপাড়া গার্লস স্কুল হিসেবে পরিচিত) জেএসসি পরীক্ষায় বুধবার গত বছরের (২০১৬) প্রশ্নপত্র সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে।
এক বছর আগের প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষায় প্রায় এক ঘণ্টা ধরে শিক্ষার্থীরা ওই প্রশ্নপত্র দিয়েই উত্তরপত্র লিখে। ভুয়া প্রশ্ন দিয়েই শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন লিখে এক ঘণ্টা পার করে।
এদিকে, বিষয়টি নিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা হৈচৈ ও বিক্ষোভ দেখালে এক ঘণ্টা পর নতুন প্রশ্ন সরবরাহ করা হলেও এক ঘণ্টা সময় বৃদ্ধি করেনি। এসব নিয়ে স্কুলে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। খবর পেয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের কয়েকজন স্কুলে প্রবেশ করলে দ্রুত পালিয়ে যান প্রধান শিক্ষক শীতল চন্দ্র দে।
এ শিক্ষক বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত। এর আগে স্থানীয় এমপি নাসিম ওসমানের স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগে কারাভোগ করতে হয় তাকে। এ ছাড়া কোচিংয়ের নামে কয়েক মাস আগে অতিরিক্ত টাকা আদায়েরও অভিযোগ উঠে এ শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
কয়েকজন পরীক্ষার্থী জানায়, বুধবার জেএসসি পরীক্ষার ১ম দিনে শহরের বার একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয় ও চিত্তরঞ্জন কটনমিল উচ্চবিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্র ছিল নারায়ণগঞ্জ গার্লস হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে। পরীক্ষা শুরু হওয়ার ৫ মিনিট পর ২০৮ ও ২০৯নং কক্ষে ১৫ জন শিক্ষার্থী কক্ষে দায়িত্বে থাকা শিক্ষককে জানান তাদেরকে ২০১৬ সালের সিলেবাসের প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয়েছে।
১ ঘণ্টা পর শিক্ষার্থীরা কান্নাকাটি ও চিৎকার শুরু করলে বিষয়টি স্কুলের প্রধান শিক্ষক শীতল চন্দ্র দে সেখানে গিয়ে নতুন প্রশ্নপত্র সরবরাহ করেন।
এ সময় পরীক্ষার্থীরা তাদের ১ ঘণ্টা সময় নষ্ট হওয়ায় বাড়তি সময় দেয়ার অনুরোধ করলে প্রধান শিক্ষকসহ উপস্থিত শিক্ষকরা তাদেরকে পরীক্ষা বাতিল করে দেয়া হবে বলে ভীতি প্রদর্শন করেন।
অভিভাবক ফেরদৌস আরা জানান, বিষয়টি নিয়ে প্রধান শিক্ষক শীতল চন্দ্র দে’র সঙ্গে আলাপ করলে তিনি ভুল স্বীকার করে এর সমাধান করবেন বলে জানালেও একপর্যায়ে অভিভাবকদের প্রশ্নের মুখে তিনি চলে যান। এরপর তার মোবাইলও বন্ধ পাওয়া যায়।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) রেজাউল বারী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্রসচিক তাৎক্ষণিকভাবে আমাদেরকে জানালে পরীক্ষার্থীরা এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতো না। স্কুল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গোপন রেখে বড় ধরনের অপরাধ করেছে। তাদের উচিত ও দায়িত্ব ছিল বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে আমাদেরকে জানানো।
তিনি জানান, এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ক্ষতিগ্রস্ত পরীক্ষার্থীদের ব্যাপারে তিনি জানান যেহেতু সারাদেশে একই সঙ্গে পরীক্ষা হয়ে গেছে তাই নতুন করে পরীক্ষা নেয়ার দাবি মানাটা জটিল বিষয়। তারপরেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।