সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নারীদের ছবি ব্যবহার করে অবস্থাসম্পন্ন ব্যক্তিদের টার্গেট করে পাঠাতেন ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট। এরপর অন্তরঙ্গ কথাবার্তার একপর্যায়ে ভিডিও কলের আমন্ত্রণ। শর্ত নিজের চেহারা দেখাবেন না তিনি। রাজি হয়ে প্রতারণার জালে পা দিতেন অপর প্রান্তের ব্যক্তি। আড়ালে থেকে এভাবেই এতোদিন অন্যদের ফাঁসাতো আজহারউদ্দিন সাগর (১৯)। এবার গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়েছেন তিনি।
মেসেঞ্জারের ভিডিও কলে সাগর ধারণ করতো অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তির আপত্তিকর ভিডিও। এরপর শুরু করতো ব্ল্যাকমেইল। এমনই এক ভুক্তভোগীর অভিযোগ পেয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)-এর গোয়েন্দা বিভাগের সাইবার টিম কয়েকটি আইডি চিহ্নিত করে। পরে তদন্ত শেষে শুক্রবার (২২ জুলাই) ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় সাগরকে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, সাগর তার আইডিগুলোতে বিভিন্ন নারীর ছবি ব্যবহার করেছে। প্রথমে ভেবেছিলাম, কোনো একটি চক্র শিল্পপতি ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের টার্গেট করে ব্ল্যাকমেইল করছে। কিন্তু তদন্তে বের হয়ে আসে আইডিগুলো চালাচ্ছিলেন আজহারউদ্দিন নামে এক যুবক। তিনি নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করলেও তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞান ভালো।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতের বরাত দিয়ে গোয়েন্দারা আরও জানান, সাগর ও তার আরেক বন্ধু প্রথমে প্রতারণামূলক এ কাজ শুরু করে। তবে গ্রেফতারকৃত সাগর গত দেড় বছর ধরে নিজেই ফেক আইডি খুলে অন্যদের ব্ল্যাকমেইল করতেন। দেড় বছরে সে প্রায় ২০-২৫ জন ব্যক্তিকে ব্ল্যাকমেইল করেছে। আদায় করেছে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা। ব্ল্যাকমেইল করার ক্ষেত্রে সাগর চ্যাটিংয়ের স্ক্রিনশট ও মেসেঞ্জারের ভিডিও কলের রেকর্ড করা ভিডিও ব্যবহার করতেন। একজনের কাছ থেকে একাধিকবার অর্থ আদায় করার কথাও স্বীকার করেছেন তিনি।
গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মহিদুল ইসলাম বলেন, মেসেঞ্জারে ভিডিও কল রিসিভ করে স্ক্রিন শেয়ারের মাধ্যমে আগে থেকে ধারণ করা একটি ভিডিও ক্লিপ চালাতো সাগর। এতে অপর পক্ষ ভাবতো, তিনি বুঝি কোনো নারীর সঙ্গেই কথা বলছেন।
গোয়েন্দারা জানান, আজহারের বিরুদ্ধে বাড্ডা থানায় একটি মামলা হয়েছে। তার সেই বন্ধুর তথ্যও পেয়েছি। তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।