নামাজ পড়ে ছেলে এবং ক্রিকেট দলের জন্য দোয়া করেছি: এবাদতের বাবা-মা

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

এবাদতের স্বপ্ন ছিল একদিন তিনি বড় ক্রিকেটার হবেন। তার এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হলো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট জয়ের মাধ্যমে। মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার প্রত্যন্ত এক গ্রামের ছেলে এবাদত হোসেন চৌধুরী।

ছোটবেলায় স্বপ্ন ছিল একদিন জাতীয় দলের হয়ে ক্রিকেট খেলে দেশের মুখ উজ্জ্বল করবেন। করেছেনও ঠিক তাই। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথমবারেরমত টেস্ট জয়ের মূল নায়ক এখন এবাদত হোসেন চৌধুরী। তিনি এখন সবার প্রসংশায় ভাসছেন।

এবাদত উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের কাঁঠালতলী গ্রামের নিজামউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে। তার সফলতার খবর জেনে স্বজনরা ও গ্রামবাসী আনন্দে বিমোহিত। এবাদতের এমন পারফরমেন্সে পরিবারের পাশাপাশি গ্রামের মানুষও ভিষণ খুশি। বুধবার বিকেলে এবাদতের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেলো যেন, আনন্দের জোয়ার বইছে পরিবারটিতে।

সেখানেই আলাপ হয় এবাদত হোসেন চৌধুরীর বাবা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী ও মা সামিয়া বেগম চৌধুরীর সঙ্গে। জাগো নিউজকে তারা বলেন, ‘লেখাপড়ার পাশাপাশি ছোটবেলা থেকেই খেলার প্রতি তার আলাদা টান ছিল। সারাদিন ক্রিকেট নিয়ে পড়ে থাকতো। তার স্বপ্ন ছিল, কোনো একদিন জাতীয় দলের হয়ে খেলে দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে। আজ আমার ছেলের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশকে জিতিয়ে সে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে। আমাদের ছেলের এমন পারফরমেন্সে আমরাও খুব খুশি। এলাকার মানুষও খুশি। আমরা তার সব খেলা দেখেছি। নামাজ পড়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য দোয়া করেছি। সকালে এবাদতের সঙ্গে আমাদের মুঠোফোনে কথা হয়েছে। সেও খুব খুশি।’

এবাদতের চাচাতো ভাই দেলওয়ার হোসেন চৌধুরী ইমন বলেন, ‘এবাদতকে নিয়ে দেশ বিদেশে প্রশংসার ঝড় উঠেছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়ে সারা বাংলাদেশের মতো আমরাও গর্বিত, আনন্দিত। আমার ছোট ভাই এবাদত হোসেন চৌধুরী ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট খেলা খুব পছন্দ করত। আমাদের বিশ্বাস ছিল, সে একদিন দেশের মুখ আলোকিত করবে। আজ সে সেই স্বপ্ন পূরণ করেছে।’

এবাদতের সহপাঠী আমজাদ হোসেন পাপলু ও এমদাদুর রাজ্জাক রাব্বি বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সে যে চমক দেখিয়েছে তাতে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। এলাকার মানুষও ভিষণ খুশি। তার জন্য আজ বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে। এলাকার সবাই তাকে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন।’

পারিবারিক সূত্রে আরো জানা গেছে, এবাদত হোসেন চৌধুরীর বাবা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বর্ডার গার্ডে (বিজিবি) চাকরি করতেন। মা সামিয়া বেগম চৌধুরী ছিলেন গৃহিনী। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে এবাদত হোসেন চৌধুরী দ্বিতীয়।

ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রতি তার আলাদা টান ছিল। স্থানীয় বিভিন্ন ক্রিকেট ক্লাবে খেলেছেন এবাদত। ভালো বোলিং করতেন বলে এলাকার বাইরেও তার নামডাক ছড়িয়ে পড়ে।

 

এসএসসি পাশ করে ২০১২ সালে সৈনিক পদে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যোগ দেন। সেখানেই চাকরির পাশাপাশি বিমান বাহিনীর নিয়মিত ভলিবল খেলতে শুরু করেন। কিন্তু ক্রিকেটের প্রতি তার টান মোটেও কমেনি।

২০১৬ সালে রবি পেসার হান্টের শেষ রাউন্ডে ১৩৯.০৯ কিলোমিটার গতিতে বল করে সবাইকে চমকে দেন এবাদত। নজরে আসেন সবার। এরপর থেকে এবাদতকে আর পেছন ফিরে থাকাতে হয়নি। ২০১৯ সালের মার্চে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এবাদতের অভিষেক হয়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই হয় তার টেস্টে অভিষেক।