নাগরিকত্ব আইন বাস্তবায়নের পক্ষে কংগ্রেস নেতার সাফাই

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে গোটা ভারত যখন বিরুদ্ধ মত আর বিক্ষোভে উত্তাল তখন প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা কপিল সিবাল বললেন, কোনো রাজ্য সরকারের পক্ষে এটা বলা কঠিন যে তারা দেশের সংসদে পাস হওয়া আইন মেনে চলবে না।

ভারতীয় টেলিভিশন এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী গতকাল শনিবার কেরালার কালিকটে কেরালা সাহিত্য উৎসবে যোগ দিয়ে বার্তা সংস্থা এএনআইকে সাক্ষাৎকারে এবং আজ রোববার সকালে এক টুইট বার্তায় তিনি ওই আইনের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের কথা জানান। উল্লেখ্য, সিএএ বিরোধী বিক্ষোভে ভারতে অনেক মানুষ নিহত হয়েছেন।

বার্তা সংস্থা এএনআইকে তিনি বলেন, ‘রাজ্যগুলো কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বার্তা দিচ্ছে যে তারা নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) ও জাতীয় জনসংখ্যা তালিকা (এনআরপি) নিয়ে অখুশি। এনআরসি তৈরি হয় এনআরপির ওপরে ভিত্তি করে এবং সেটা কোনো রাজ্যের স্থানীয় রেজিস্ট্রার বাস্তবায়িত করবেন।’

কংগ্রেস সরকারের সময় ভারতের এই আইনমন্ত্রী ও দেশটির সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতির তিনবারের সভাপতি আরও বলেন, ‘সিএএবিরোধী আন্দোলনে অন্য দলগুলোর উচিত কংগ্রেসকে সামনে রাখা। সবার একসঙ্গে দাঁড়ানো উচিত। কেননা, এটা জাতীয় আইন। আমাদের যা করা উচিত, তা হলো রাজনৈতিকভাবে একত্র হয়ে এই লড়াই লড়া।’

প্রথম রাজ্য হিসেবে নাগরিকত্ব আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে কেরালা। অন্তত ৭টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, তাদের রাজ্যের এই আইনের প্রয়োগ করতে দেবেন না। কপিল সিবাল বলেন, ‘সাংবিধানিকভাবে কোনো সরকারের পক্ষে এটা বলা কঠিন যে, আমি সংসদে পাস হওয়া আইন মেনে চলবো না।’

রোববার সকালে টুইট বার্তায় কপিল সিবাল বলেন, ‘নতুন নাগরিকত্ব আইন অসাংবিধানিক এবং এর বিরুদ্ধে লড়াই চলবে। আর রাজ্য বিধানসভার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে এর বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ করার। তবে আইনটিকে সুপ্রিম কোর্ট সাংবিধানিক বলে ঘোষণা দিলে এর বিরোধিতা করা সমস্যাজনক।’

কংগ্রেসের আরেক বর্ষীয়ান নেতা সালমান খুরশিদ সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানান, যদি সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ না করে তবে এই আইন আইনের বইতেই থেকে যাবে। সেক্ষেত্রে তাকে অমান্য করা কঠিন বলে দাবি করেন তিনি। ভারতের সুপ্রিম কোর্টে বিতর্কিত এই আইন নিয়ে ইতোমধ্যে ৬০টি পিটিশন দাখিল হয়েছে।

ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ থেকে ২০১৫ সালের আগে ভারতে পাড়ি জমানো অমুসলিম অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেয়ার কথা বলা হয়েছে। সমালোচকদের মতে, এই আইন বৈষম্যমূলক এবং সংবিধানে বর্ণিত দেশের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তির পরিপন্থী।