কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাইশা মমতাজ মীম নিহতের ঘটনায় চালক সাইফুর রহমান ও তার সহকারী মশিউরের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
শনিবার (২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর খিলক্ষেত থানায় হত্যা মামলা করেন মীমের বাবা নূর মোহাম্মদ মামুন। রাতে জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন খিলক্ষেত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুন্সী সাব্বির আহমেদ।
তিনি বলেন, শুক্রবার (১ এপ্রিল) রাতে কাভার্ডভ্যানের চালক সাইফুর ও তার সহকারী মশিউরকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করে খিলক্ষেত থানা পুলিশ। এসময় জব্দ করা হয় ভ্যানটি। এ ঘটনায় সন্ধ্যায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে।
মামলা দেরিতে হওয়ার কারণ জানতে চাইলে ওসি বলেন, মীমের পরিবার দাফন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় তারা থানায় আসতে পারেনি। তাই অভিযোগ করতে দেরি করেছে।
এর আগে শুক্রবার ঢাকার উত্তরার বাসা থেকে বের হয়ে স্কুটি নিয়ে গুলশানের দিকে যাচ্ছিলেন মীম। কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে নামার পথে একটি কাভার্ডভ্যানের সঙ্গে তার স্কুটির ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন মীম। পরে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে একজন পথচারী মীমকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে ৯৯৯-এ ফোন করে জানান। পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে মীমের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। তার মরদেহ দাফন করা হয় গ্রামের বাড়ি গাজীপুরের কালিয়াকৈরে পারিবারিক কবরস্থানে।
মীমের মামাতো ভাই অ্যাডভোকেট মো. নাবিল আলী কামরুল জাগো নিউজকে বলেন, মীম উত্তরা-৬ নম্বর সেক্টরে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। বাসে যানজট ও ভিড় থাকায় স্কুটি চালিয়ে যেতেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। এর আগে কখনো অ্যাকসিডেন্ট করেনি সে। দুর্ঘটনার দিন স্কুটি চালিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছিল মীম। কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় তার মাথায় আঘাত লাগে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দুই বোনের মধ্যে মীম বড়। মেধাবী হওয়ায় পরিবারে সবার আদরের ছিল। ছোটবেলা থেকেই মীমের পছন্দের সাবজেক্ট ছিল ইংরেজি। আর স্বপ্ন ছিল নামিদামি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে ভালো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা। সেই অনুযায়ী বাবার প্রতিষ্ঠিত মৌচাক আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে ভর্তি হয়েছিলেন নর্থ-সাউথে। এরপর থেকে মীম স্কুটি চালিয়ে বাসা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতেন। এভাবে কেটে যায় তিন বছর।