ভোলার দৌলতখানে মধ্য মেঘনায় অবস্থিত হাজিপুর ইউনিয়নটি নদীভাঙনের পথে। এতে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে চলেছে ইউনিয়নটি।
ইউনিয়নের সর্বশেষ স্থাপনা ৫০নং মধ্য হাজিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিনতলা পাকা ভবনটিও মেঘনার ভাঙনে বিলীন হতে চলেছে।
নদীভাঙন ভবনের একেবারে ভীত স্পর্ষ করেছে। যে কোনো সময় ভবনটি তলিয়ে যেতে পারে নদীগর্ভে।
এমন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় মঙ্গলবার উপজেলা শিক্ষা বিভাগ তড়িঘড়ি করে উন্মুক্ত নিলাম ডেকে এক কোটি ৩৭ লাখ টাকায় নির্মিত ভবনটি মাত্র ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে
। সেখানে পাঁচজনের মধ্যে সর্বোচ্চ দরদাতা মো. আবি আবদুল্লার কাছে ভবনটি বিক্রি করা হয়।
সরেজমিন গিয়ে ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইলিকনস্ট্রাকশন এলজিইডির অর্থায়নে ভবনটি নির্মান করে। এক বছর না পেরোতেই ভবনটি নদীগর্ভে বিলীন হতে চলেছে।
সঠিক সময়ে ভবনটি নিলাম ডাকের ব্যবস্থা কেন করা হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে উপজেলা শিক্ষাকর্মকর্তা মোহাম্মদ হোসেন জানান, প্রধানশিক্ষক ও বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি যথাসময়ে নদীর ভাঙনের তীব্রতা সম্পর্কে জানায়নি। এ কারণে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে ভবনটি নিলামে বিক্রির ব্যবস্থা করা যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়ার জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রহমানকে ফোনে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি।
বৃহস্পতিবার উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিয়ে ওই চরে গিয়ে দেখা যায়, আশ্রয়ন প্রকল্পের সাতটি গুচ্ছগ্রামের ৪২০টি সরকারি ঘর ও ব্যক্তি পর্যায়ের আরও চারশতাধিক ঘরের কোনো চিহ্নই নেই।
মেঘনার ভাঙনে আটশতাধিক পরিবারের আবাসস্থল নদীগর্ভে বিলীনহয়ে গেছে।
জানা যায়, ওই চরে সাতটি গুচ্ছগ্রামে ২০১৯ সালে আশ্রয়নের ৪২০টি ঘর নির্মানে ছয় কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয় হয়।
এ ছাড়াও সাতটি গুচ্ছগ্রামের প্রতিটির জন্য মাটিভরাটে দেড় থেকে দুইশ মেট্রিকটন গম/চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়।এসব স্থাপনা সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে এখন ওই চরে শুধু বিদ্যালয় ভবনটিই কোনরকমে দাঁড়িয়ে আছে।
ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় সেটিও নিলামে পাওয়া ব্যক্তির নিয়োজিত শ্রমিকরা হাতুরী-সাবল দিয়ে ভাঙছে। গত এক বছরের মধ্যে চরবাসীদের বাড়ি ঘর সব নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
নদীসিকস্ত হয়ে ওই চরের কয়েক হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। এসব মানুষ এখন বেড়িবাঁধ ও আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।
ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হামিদুর রহমান টিপু নদীভাঙনে উদ্বাস্তু হওয়া এসব মানুষের দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের উচ্চমহলের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।