গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, রাজস্ব বাড়ানোই কর মেলা আয়োজনের অন্যতম উদ্দেশ্য। সে জন্য প্রতি বছরই নতুন করদাতা সৃষ্টি এবং করবান্ধব পরিবেশ তৈরির কোন বিকল্প নেই।
নতুন করদাতা বাড়লেই মেলা আয়োজন সফল ও সার্থক হবে। আজ নগরীর জিইসি কনভেনশন হলে সপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
কর অঞ্চল-১ এর কমিশনার ও মেলা কমিটির আহ্বায়ক মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নান, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনার সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের সহ-সভাপতি মাহবুব চৌধুরী, উইম্যান চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবিদা মুস্তফা প্রমুখ।
প্রধান অতিথি বলেন, ‘১৬ কোটি জনসংখ্যার এই দেশে কেবল ১২ লাখ করদাতা। এটি মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাই মানুষকে সচেতন করতে হবে। বন্ধুসূলভ ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের করের আওতায় আনা প্রয়োজন। পক্ষান্তরে বর্তমানে মাত্র ২০ লাখ টিনধারী রয়েছে। কর আহরণ বাড়াতে হলে কমপক্ষে ১ কোটি লোককে টিনধারী এবং ৭৫ লাখকে করের আওতায় আনা দরকার।
তাহলেই দেশের দ্রুত উন্নয়ন হবে। ’
মন্ত্রী বলেন, আগামী অর্থবছরে সাড়ে চার লাখ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট ঘোষণা করা হবে। সবাই যদি আয়কর দিই তাহলে বাজেটের আকার আরও বাড়বে। সরকার ৬০ রকমের সামাজিক নিরাপত্তা সেবা দিচ্ছে। করের হার যত বেশি হবে, দেশ ততই উন্নত হবে। তিনি বলেন, পৃথিবীর অন্য দেশেও ভ্যাট আছে। কোনো কোনো দেশে ৭ শতাংশ। আমরা যদি ১৫ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশ করি তাহলে আদায় ৪ গুণ হবে। কারণ তখন সবাই গিয়ে দিয়ে আসবে। ১৫ শতাংশ বোঝা হয়ে যায়। কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে আনতে হবে।
গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, ‘রাজস্ব বাড়াতে কর মেলাকে কেবল শহরে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। গ্রামাঞ্চলের তৃণমূলেও কর মেলার বার্তা ছড়িয়ে দিতে হবে। তাছাড়া একই ব্যক্তির কাছে বারবার না গিয়ে আয়করের আওতা বাড়ানো দরকার। এ জন্য গ্রামেও মেলার আয়োজন করতে হবে। কর নিয়ে মানুষকে বুঝাতে হবে। ’
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রতি বছরের মতো এবারও ঢাকা-চট্টগ্রামসহ সারাদেশে সপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলার আয়োজন করেছে। চট্টগ্রাম আয়কর বিভাগ (কর অঞ্চল-১, ২, ৩, ৪) যৌথভাবে এ মেলার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মেলায় ২০১৭-১৮ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে। ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন বুথে নতুন করদাতাদের রেজিস্ট্রেশন ও বর্তমান করদাতাদের রি-রেজিস্ট্রেশন করা হবে। রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইট ব্যবহার করে অনলাইনে আয়কর দেওয়া যাবে। অনলাইন রিটার্ন ফিলিং দাখিলের জন্য নির্দেশিকা, অনলাইন রিটার্ন দাখিলের জন্য আইডি ও পাসওয়ার্ড দেওয়ার পাশাপাশি সোনালী ও জনতা ব্যাংকের বুথে আয়কর জমা দেওয়া যাবে। ই-পেমেন্টের মাধ্যমে আয়কর পরিশোধের সুযোগ রয়েছে। রিটার্ন পূরণে সহায়তার জন্য রয়েছে হেল্প ডেস্ক।