প্রায় দেড় বছর ধরে করোনার সঙ্গে লড়াই করছে পুরো বিশ্ব। কোনো কোনো দেশ দক্ষতার সঙ্গে এই মহামারি মোকাবিলা করলেও বেশিরভাগের অবস্থাই নাজুক। বাংলাদেশের অবস্থাও খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। করোনা পরিস্থিতিতে চিকিৎসা ব্যবস্থা সচল রাখতে বেশ নাকানি-চুবানি খেতে হচ্ছে দেশকে।
করোনা মহামারির মধ্যে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) স্বাস্থ্যখাতের জন্য যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল, তার ৯ মাসে মাত্র ২০ দশমিক ৯৯ শতাংশ বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
জরুরি পরিস্থিতিতে মন্ত্রণালয়টির এমন অদক্ষতা সত্ত্বেও করোনাসহ দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গতবারের চেয়ে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের এডিপিতে এ খাতে জোর দেয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যখাতে এবার বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ১৭ হাজার ৩০১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা, যা এডিপির ৭ দশমিক ৭১ শতাংশ। গুরুত্বের দিক থেকে পঞ্চম খাত এবার স্বাস্থ্য। এর পাশাপাশি এবার গুরুত্ব পেয়েছে শিক্ষাও।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের এডিপিতে মোট ১৫টি খাত রাখা হয়েছে। তার মধ্যে গত কয়েক বছরের মতো এবারও এডিপিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাচ্ছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাত। ২০২১-২২ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ৬১ হাজার ৬৩১ কোটি ৪১ লাখ টাকা, যা মোট এডিপির ২৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
গুরুত্বের দিক থেকে এবার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। এ খাতে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৮৬৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, যার আকার ২০ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
তৃতীয় স্থানে থাকা গৃহায়ন ও সম্প্রদায়ের সুযোগ-সুবিধা (হাউজিং ও কমিউনিটি অ্যামিনিটিস) খাতে বরাদ্দ ২৩ হাজার ৮২১ কোটি ১৬ লাখ টাকা, যার আকার মোট এডিপির ১০ দশমিক ৬২ শতাংশ।
শিক্ষা খাত রয়েছে চতুর্থ স্থানে। এ খাতে বরাদ্দ ২৩ হাজার ৩২৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, যার আকার ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ।
ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন খাত। এ খাতে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ১৪ হাজার ২৭৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, যা মোট এডিপির ৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
তাছাড়া পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ খাতে ৮ হাজার ৪৭০ কোটি ৩৫ লাখ টাকা (৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ), কৃষিখাতে ৭ হাজার ৬৪৬ কোটি ৫৩ লাখ (৩ দশমিক ৪১ শতাংশ), শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবাখাতে ৪ হাজার ৬৪৩ কোটি ২ লাখ (২ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ), বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তিখাতে ৩ হাজার ৫৮৬ কোটি ৬৩ লাখ (১ দশমিক ৬০ শতাংশ), পাবলিক অর্ডার অ্যান্ড সেফটি খাতে ৩ হাজার ২০৪ কোটি ৯৮ লাখ (১ দশমিক ৪৩ শতাংশ), জেনারেল পাবলিক সার্ভিস খাতে ২ হাজার ৯২৩ কোটি ১২ লাখ (১ দশমিক ৩০ শতাংশ), বিনোদন, সংস্কৃতি ও ধর্মখাতে ২ হাজার ১৯০ কোটি ৭৪ লাখ (দশমিক ৯৮ শতাংশ), সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ১ হাজার ৬৪৮ কোটি ১৬ লাখ (দশমিক ৭৩ শতাংশ) এবং প্রতিরক্ষা খাতে ৮৫০ কোটি (দশমিক ৩৮ শতাংশ) টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে।