অনলাইনভিত্তিক সবধরনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শিগগিরই কড়া নজরদারির মধ্যে আসবে বলে জানিয়েছেন প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান। করোনাকালে অনলাইন প্লাটফর্মগুলোর বিক্রি বাড়লেও আস্থার সংকট কাটছে না। তাই ক্রেতাদের আস্থা ফেরাতেই এই উদ্যোগে নেয়ার কথা জানিয়ে সরকারের এই সংস্থাটি।
করোনাকালের প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবসায়িক কার্যক্রমের নানা তথ্য-উপাত্তে দেখা যায়, করোনায় স্থবির অর্থনীতিতেও জমজমাট ই-কমার্স ব্যবসা। কারও সর্বনাশ হলে কারও তো পৌষ মাস হবেই। যেন বহু বছর ধরে চলে আসা এই প্রবাদটিরই সত্যতার আবারও প্রমাণ করে দিল এবারের করোনা মহামারি। এই ভাইরাসের ধাক্কায় দেশের বড় ও প্রতিষ্ঠিত শিল্প-সেবা খাত যখন বিপর্যস্ত, তখন উল্টো চিত্র ই-কর্মাস ব্যবসায়।
উদ্যোক্তারা বলছেন, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনলাইনে পণ্য বিক্রি বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। ওয়েব পেইজে পণ্য তালিকায় যুক্ত হচ্ছে নিত্য নতুন আইটেম।
করোনাকালীন ক্রেতা চাহিদা থাকায় চাল-ডাল থেকে পোশাক কিংবা সুরক্ষা সামগ্রী- সবকিছুই বিক্রি করছে অনলাইন প্রতিষ্ঠানগুলো। পণ্যভেদে দেয়া হচ্ছে মূল্যছাড় কিংবা আর্কষণীয় অফার। ডিজিটাল মাধ্যমে অর্থ পরিশোধে ক্রেতারা পাচ্ছেন ক্যাশব্যাক সুবিধাও। ই-ক্যাবের ধারণা, চলতি বছর অনলাইন কেনাকাটায় লেনদেনের পরিমাণ ছাড়াতে পারে আট হাজার কোটি টাকা।
টোয়েন্টি ফোর বাজার ডটকমের সিইও মাকসুদুল করিম হীরা জানান, অনলাইন সব প্রতিষ্ঠানেরই বিক্রি দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আর গৃহস্থালী পণ্যের চাহিদা ব্যাপক আকারে বেড়ে গেছে।
জাদ্রো ডটকমের বিজনেস প্রধান সাহেদুল ইসলাম জানান, এন-৯৫ মাস্ক কিছুদিন আগেও যেখানে সাড়ে ৮শ’ টাকা করে বিক্রি হতো এখন তা দেয়া হচ্ছে ৫শ’ টাকায়।
তবে, ব্যবসা বাড়লেও আস্থার সংকট কোনভাবেই কাটছে না উদীয়মান এই খাতে। কেনাকাটায় লোভনীয় অফারের আড়ালে হরহামেশাই ঘটছে নিত্যনতুন প্রতারণার ঘটনা ঘটছে জানান ক্রেতারা। তবে, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে অনলাইন কেনাকাটা অনেকটাই স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিয়েছে তাদের। এর সঙ্গে কেনাকাটায় প্রতিষ্ঠানগুলোর দেয়া অফারও তারা পেয়েছেন। তবে, অনেকের অভিযোগ সময় মতো ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য হাতে পেলেও তা ভাঙা পেয়েছেন।
দেরিতে হলেও অনলাইনভিত্তিক ব্যবসায়িক কার্যক্রম সুনির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে আনতে যাচ্ছে সরকার। এ প্রসঙ্গে প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম বলেন, যাদের কর্মকাণ্ড মনে হবে যে প্রতিযোগিতা বিরোধী আইনের আওতায় তাদের কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করে আমাদের আইনে যা আছে সে ব্যবস্থা নিব।
দেশে বর্তমানে চালু রয়েছে পাঁচ শতাধিক ই-কর্মাস ওয়েবসাইট। ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য বলছে, এর বাইরেও ফেসবুকে ব্যবসা পরিচালনা করছে কয়েক হাজার প্রতিষ্ঠান।