নগরীতে অবৈধ ৭৮ বহুতল ভবনের নির্মান কাজ বন্ধ করে দিলো বিসিসি

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

বরিশাল সিটি কর্পোরেশন’ এই নামটি বর্তমানে বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যাবে দুর্নীতি মুক্ত, স্বচ্ছ এবং জনগণের সেবায় নিয়োজিত একটি দপ্তর। কিন্তু বিগত মেয়রদের আমলে এই দপ্তরটি ছিল অনিয়ম, দুর্নীতি আর জনমানুষের ভোগান্তির অপর এক নাম।

নানা অনিয়ম, লুটপাট আর দুর্নীতিতে এতই ডুবে গিয়েছিল যে দপ্তরটির প্রায় সাড়ে ৩শ’ কোটি টাকার দেনা হয়ে যায়। আর এই সাড়ে ৩শ’ কোটি টাকার দেনা আগেকার মেয়রদের ধারাবাহিকতায় সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা আহসান হাবিব কামাল রেখে গেছেন নগরভবনে। অবশ্য এ দেনা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। এর আগে এত দেনা রেখে যাননি অন্য কোনো মেয়র।

এত বড় অংকের দেনা ও নানা অনিয়মের ভবন হিসেবে খ্যাত বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে নতুনভাবে গত ২২ অক্টোবর ২০১৮ সালে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।

তার দায়িত্ব নেওয়ার পরেই বর্তমানে এই দপ্তর তার অতীতের সকল কলঙ্ক মুছে ফিরে পেয়েছে সততা ও ন্যায়ের ধারাবাহিকতা। দায়িত্ব গ্রহণের পর এই দেনা মেটানোই নতুন মেয়র সাদিকের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু নতুন মেয়র সব বাধা অতিক্রম করে নতুন করে জনগণকে সততার নগর ভবন উপহার দিয়েছেন।

অর্থ সংকট মোকাবিলা করেই মেয়র সাদিক যখন তার স্বপ্নের বরিশাল গড়ার জন্য নগরীকে সাজাতে বিভিন্ন পরিকল্পনা শুরু করেন ঠিক তখনই বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় শহরের বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে নির্মিত অবৈধ ভবনগুলো।

সাবেক মেয়রদের খামখেয়ালী ও অব্যবস্থাপনার ফলে নগর ভবন থেকে ছাড়পত্র অথবা প্ল্যান পাসের নিয়মের তোয়াক্কা না করে নির্মাণ শুরু হয় এ সকল অবৈধ ভবনের। কিন্তু মেয়র সাদিকের ন্যায় ও সততার কাছে হার মানতে হয় প্রভাবশালী মহলকে।তিনি এ সকল অবৈধ ভবনের কাজ বন্ধ করে দেন এবং এদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশন’র আর.আই শাখা সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বরিশাল নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে অবৈধ ৭৮টি ভবনের কাজে নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়ায় তাদের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বেশি অবৈধ ভবন নির্মাণ করা হয়েছে ৩০নং ওয়ার্ডে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানায়, এ সকল ভবনের বেশিরভাগই প্রভাবশালী মহলের। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভবনগুলো হলো- বরিশাল জিলা স্কুল সংলগ্ন একটি বহুতল ভবন, নগরীর বিউটি হল সংলগ্ন একটি বহুতল ভবন, সোহেল চত্বর সংলগ্ন একটি বহুতল ভবনসহ নগরীর উল্লেখযোগ্য বিভিন্ন স্থানে নির্মিত অবৈধ ভবন।

এ বিষয়ে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসরাইল হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ৭৮টি ভবনের কাজ আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। নগরীতে কোনো অবৈধ ভবন নির্মাণ কাজ করা যাবে না। তবে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের নিয়মের আওতায় এসে ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে।

জানতে চাইলে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা বেলায়েত হাসান বাবলু বলেন, আমরা সর্বদাই অনিয়ম এবং দুর্নীতির বিপক্ষে। মেয়র মহোদয় অবৈধ ভবন যাতে নগরীতে নির্মাণ না হয় সে ব্যাপারে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বরিশাল সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সভাপতি কাজল ঘোষ বলেন, বর্তমান মেয়র নগরীকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। যার কারণে নগরীতে অবৈধভাবে কোনো ভবন নির্মাণের কাজ না করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সিটি কর্পোরেশনের নিয়মনীতি মেনে যদি কেউ ভবন নির্মাণ করেন সেক্ষেত্রে কোনো বাধা দিচ্ছেন না কেউ। মেয়রের এমন উদ্যোগ আসলেই প্রশংসনীয়। বিগত দিনে এমন উদ্যোগ নেননি কোনো মেয়র।